মহান মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা দেওয়া ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’ এবং ‘নোঙর তোলো তোলো সময় যে হলো হলো’ কালজয়ী এ দুটি সহ এমন অনেক গানের গীতিকবি নয়ীম গহরের আজ, বৃহস্পতিবার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।
২০১৫ সালের এই দিনে তিনি মারা যান। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার লেখা গণজাগরণী গান মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত নয়ীম গহর একাধারে গীতিকার, ঔপন্যাসিক, গায়ক, নায়ক, নাটক রচয়িতা, বিবিসির (লন্ডন) বাংলা ভাষ্যকার, খবর পাঠকসহ নানা প্রতিভার অধিকারী হওয়ার পরও ছিলেন প্রচারবিমুখ।
১৯৩৬ সালের ১৫ আগস্ট বিক্রমপুরের (বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলা) এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ছাত্রজীবনেও অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ভালো চিত্রকরও ছিলেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি আজীবন সংস্কৃতি অঙ্গনের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। সর্বমহলে পরিচিতি পেয়েছিলেন আধুনিক ও মুক্তিযুদ্ধের গণজাগরণী গান রচনার মধ্য দিয়ে।
১৯৭১ সালে রক্তঝরা দিনগুলোতে তার লেখা 'নোঙ্গর তোলো তোলো', 'সাগর পাড়িতে ঝড় জাগে যদি', 'পুবের ঐ আকাশে সূর্য উঠেছে', 'জয় জয় জয় জয় বাংলা'সহ অন্যান্য গান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা জুগিয়েছে মুক্ত-স্বাধীন একটি দেশ গড়ার। দেশাত্মবোধক গানের পাশাপাশি তিনি দুই শতাধিক গানের কথা লিখেছেন। সংগীতের পাশাপাশি সংস্কৃতির অন্যান্য শাখাতেও নিজস্ব সৃষ্টিকর্ম নিয়ে প্রশংসা পেয়েছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তার রচিত প্রথম নাটক 'পাখি আমার জয়ন্ত' বিটিভিতে প্রচারিত হয়। আবদুল্লাহ আল-মামুনের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছিলেন গোলাম মুস্তাফা, সুজাতা প্রমুখ। এ ছাড়াও ফজলে লোহানীর সঙ্গে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান 'যদি কিছু মনে না করেন' নির্মাণ করেছিলেন। অভিনয়শিল্পী ইলোরা গহর তার কন্যা। তার কাব্যগ্রন্থ 'শব ও স্বগতোক্তি', 'নিষিদ্ধ বিছানা' এবং গল্পগ্রন্থ 'রাহুগ্রাস'।
/এমএম/