X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ চেকআপেও বেশ সুস্থ ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:০২আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:১৯

শেষ চেকআপেও বেশ সুস্থ ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু

ব্যান্ড কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর হৃদযন্ত্রে ২০০৯ সালে রিং পরানো হয়। ২০১২ ও ২০১৫ সালেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এই শিল্পী। শুরু থেকেই রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
এমনকি দুই সপ্তাহ আগেও হার্টের চেকআপ করিয়েছেন তিনি। তখনও দিব্যি সুস্থ ছিলেন।
আজ (১৮ অক্টোবর) স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক ও মুখপাত্র মির্জা নাজিম উদ্দিনের মতে, ‘হাসপাতালে আসার আগেই আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যু হয়েছে। যখন সকালে তার ড্রাইভার উনাকে নিয়ে আসেন, তখন আমরা মৃত পাই। আমাদের একটি বিশেষ টিম আছে, জরুরি ভিত্তিতে তাদের নিয়ে কাজ শুরু করি। আজ সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি।’
এই চিকিৎসক আরও জানান, আইয়ুব বাচ্চু দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। তার হৃদযন্ত্র ৩০ শতাংশ পাম্প করে। যেটা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ দরকার। এটা নিয়ে তাকে সবসময় চেকআপে থাকতে হতো।
তিনি বলেন, ‘ড্রাইভার আইয়ুব বাচ্চুকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার তথ্যমতে, আইয়ুব বাচ্চুর মুখ থেকে ফেনা বের হচ্ছিল। এর অর্থ তার হার্টের কার্যকারিতা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়ে এই তরল পদার্থ বের হয়েছে। মানে হার্ট ফেল করেছে।’

মির্জা নাজিম উদ্দিন আরও জানান, এর আগে ২০০৯ সালে তার হার্টে রিং পরানো হয়। আর ২০১২ সালে ফুসফুসে পানি জমার কারণে এই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিতে হয়েছিল আইয়ুব বাচ্চুকে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১৬ অক্টোবর রাতে রংপুরে একটি কনসার্ট শেষ করে ১৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকায় ফিরেন আইয়ুব বাচ্চু। আজ (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাসায় হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। তড়িঘড়ি তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবি’র দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক। গিটারের জাদুকর হিসেবে আলাদা সুনাম ছিল তার। ভক্তদের কাছে তিনি ‘এবি’ নামেও পরিচিত। আইয়ুব বাচ্চুর নিজের একটি স্টুডিও আছে। ঢাকার মগবাজারে অবস্থিত এই মিউজিক স্টুডিওটির নাম এবি কিচেন।
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৭৮ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের মাধ্যমে সংগীত জগতে তার পথচলা শুরু হয়। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোলস ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে এলআরবি ব্যান্ড গঠন করেন আইয়ুব বাচ্চু। এর প্রথম অ্যালবাম ‘এলআরবি’ বাজারে আসে ১৯৯২ সালে। এটাই দেশের প্রথম ডাবল অ্যালবাম। এলআরবি’র অন্য অ্যালবামগুলো হলো ‘সুখ’ (১৯৯৩), ‘তবুও’ (১৯৯৪), ‘ঘুমন্ত শহরে’ (১৯৯৫), ‘ফেরারি মন’ (১৯৯৬), ‘স্বপ্ন’ (১৯৯৬), ‘আমাদের বিস্ময়’ (১৯৯৮), ‘স্পর্শ’ (২০০৮), ‘যুদ্ধ’ (২০১২) এবং সর্বশেষ ‘রাখে আল্লা মারে কে’ (২০১৬) ।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ হলো তার প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। তার সাফল্যের শুরুটা হয় দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’র (১৯৮৮) মাধ্যমে। ১৯৯৫ সালে বাজারে আসে তার তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। এর প্রায় সবক’টি গানই জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে ‘কষ্ট কাকে বলে’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘অবাক হৃদয়’, ‘আমিও মানুষ’ গানগুলো। তার অন্য একক অ্যালবামগুলো হলো ‘সময়’ (১৯৯৮), ‘একা’ (১৯৯৯), ‘প্রেম তুমি কি’ (২০০২), ‘দুটি মন’ (২০০২), ‘কাফেলা’ (২০০২), ‘রিমঝিম বৃষ্টি’ (২০০৮), ‘বলিনি কখনো’ (২০০৯), ‘জীবনের গল্প’ (২০১৫)।
আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া গানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘চলো বদলে যাই’। এর কথা ও সুর তারই। শ্রোতাপ্রিয় গানের তালিকায় আরও রয়েছে ‘শেষ চিঠি কেমন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘হকার’, ‘সুখ’, ‘রুপালি গিটার’, ‘গতকাল রাতে’, ‘তারা ভরা রাতে’, ‘এখন অনেক রাত’ ইত্যাদি।
রক ঘরানার গানের এই শিল্পী আধুনিক আর লোকগীতিতেও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। বেশ কিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া প্রথম গান ‘লুটতরাজ’ ছবির ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’। এছাড়া ‘আম্মাজান’ ছবির শিরোনাম গানও জনপ্রিয়।

/এম/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
কানের ধ্রুপদি বিভাগে শ্যাম বেনেগালের ‘মন্থন’
কানের ধ্রুপদি বিভাগে শ্যাম বেনেগালের ‘মন্থন’
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা
প্রেম নাকি বিয়ে, মুখ খুললেন ইলিয়ানা