X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যে কান্নার ছবি কাঁদাচ্ছে মানুষকে

বিদেশ ডেস্ক
২৭ আগস্ট ২০১৬, ২১:৪২আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০১৬, ২১:৪২

আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া বৃদ্ধ দম্পতির কান্নাতারা কাঁদছেন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ দুটো শরীর। অশক্ত, অসমর্থ্য হাতে হাত। এ ভাবেই তো হাতে হাত রেখে কেটেছে ছয় দশকেরও বেশি। ৬২ বসন্তে একসঙ্গে কত গান, কত যুদ্ধ-লড়াই, কত প্রেম-অপ্রেম। আজও একের হাতে শক্ত করে ধরা আর একটি হাত। তবু নিরুপায় চোখের জলের ধারা যেনও বাগ মানতে চাইছে না। তাই তারা কাঁদছেন।

৬২ বছরের বিবাহিত জীবনের প্রান্তে এসে আজ তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। দু’জনের করুণ মিনতিকে অগ্রাহ্য করেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে দুটো আলাদা চিকিৎসাকেন্দ্রে। পরিবারও চায়নি এমনটা হোক। বার বার অনুরোধ করেও দুজনকে একসঙ্গে রাখার মতো কোনও স্থান পাওয়া যায়নি কেয়ার হোমে। হৃদয়টাই যেনও ভেঙে দু’টুকরো করে দেওয়া হয়েছে এই বয়েসে এসে। দেখা হতেই তাই বাঁধ মানেনি চোখের জল। অসহায় দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সেই ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তাদের নাতনি। সেই ছবিই এখন ভাইরাল।

কানাডার ভ্যানক্যুভারের বাসিন্দা ৮৩ বছরের ওলফার্ম গটসচক আর ৮১ বছরের অনিতা। ১৯৫৪ সালে জার্মানিতে যখন প্রথম দেখা হয়েছিল ওদের, ওলফার্ম যখন ২১ বছরের তরুণ আর অনিতা আঠারোর সদ্য তরুণী। বিয়ে হয়েছিল চার মাস পরেই। তারপর ৬২টা বছর কেউ কাউকে ছেড়ে থাকেননি। আর বয়স যত নিয়ে যাচ্ছে জীবনের শেষ প্রান্তের দিকে, ততই যেন একে অন্যকে আরও আঁকড়ে ধরে থাকতে চাইছেন দুজনে। কিন্তু সেই একসঙ্গে চলার পথটাই যে কেড়ে নিল প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মকানুন।

বৃদ্ধ দম্পতি

সমস্যার শুরুটা ৮ মাস আগে। ডিমেনসিয়ায় আক্রান্ত হন ওলফার্ম। একা হাতে ওলফার্মের যত্ন নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না অনিতার পক্ষে। বাধ্য হয়েই ওলফার্মকে পাঠাতে হয় কেয়ার হোমে। কিন্তু মন মানতে চায় না অভিন্ন দুই হৃদয়ের। চিকিৎসকের কাছ থেকে একটু বেশি সময় হোমে থাকার অনুমতি আদায় করেন অনিতা। এদিকে প্রত্যেকদিন একটু একটু করে স্মৃতিশক্তি খোয়াচ্ছেন ওলফার্ম। বেশিরভাগ কথাই মনে রাখতে পারেন না। তবে রোজ নিয়ম করে অপেক্ষা করেন স্ত্রীর জন্য। কবে আবার তারা একসঙ্গে থাকবেন সেই আশায় দিন গোনেন।

তাদের একসঙ্গে রাখতে কম লড়াই করেনি তাদের পরিবার। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও হোম কর্তৃপক্ষের থেকে ওলফার্ম আর অনিতাকে একসঙ্গে রাখার অনুমতি জোগাড় করতে পারা যায়নি।

২৩ আগস্টও রোজকার মতোই স্বামীকে দেখতে নার্সিংহোমে এসেছিলেন অনিতা। সেখানে এসে জানতে পারেন ওলফার্মের রিপোর্টে লিম্ফোমা (এক ধরনের ব্লাড ক্যানসার) ধরা পড়েছে। এরপরেই আর নিজেকে শক্ত রাখতে পারেন না অনিতা। স্বামীর সঙ্গে দেখা হতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন দু’জনে। তাদের অসহায়ভাবে কাঁদতে দেখে স্থির থাকতে পারেননি নাতনি অ্যাশলে বার্টইক। তার প্রিয় ‘ওমি’ আর ‘ওপি’র ছবি তুলে পোস্ট করেন ফেসবুকে। ক্যাপশনে লেখেন, ‘আমার তোলা সবচেয়ে দুঃখের ছবি’। শুধু ছবি পোস্ট করাই নয়, ছবির সঙ্গে জুড়ে দেন তাদের অসহায়ত্বের কাহিনীও। স্বাস্থ্য সেবার এই সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে সবার কাছ থেকে সমর্থনও চান অ্যাশলে। এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় ছবিটি।

কেয়ার হোম কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা সব সময়েই চেষ্টা করেন যাতে বৃদ্ধ দম্পতিকে এক সঙ্গেই রাখা যায়। কিন্তু স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে সব সময় তা সম্ভব হয় না’। সূত্র: আনন্দবাজার।

/এএ/

সম্পর্কিত
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দেওয়া ব্যক্তির মৃত্যু
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দিলেন এক ব্যক্তি
সর্বশেষ খবর
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
সাফের আগে চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে সাবিনাদের ম্যাচ
সাফের আগে চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে সাবিনাদের ম্যাচ
কানের ধ্রুপদি বিভাগে শ্যাম বেনেগালের ‘মন্থন’
কানের ধ্রুপদি বিভাগে শ্যাম বেনেগালের ‘মন্থন’
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ