যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা রাজ্যে তেল পাইপলাইনবিরোধী বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করেছেন। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের গণহারে গ্রেফতারের পর শুক্রবার দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
নর্থ ডাকোটায় বিতর্কিত একটি তেলের পাইপলাইন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনাপূর্ণ ও সহিংস পরিস্থিতি অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার ডাকোটা পুলিশ গ্রেফতার অভিযান চালায়। কর্তৃপক্ষ জানায়, এ ঘটনায় ১১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গণগ্রেফতারের পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ আরও গতি পায়। বিক্ষোভের সময় দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। নর্থ ডাকোটার জরুরি বিভাগ জানায়, রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে এক ব্যক্তির হাতে গুলি লাগে। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর পর অপর এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ওই গুলির ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
রাস্তা ও বেসরকারি জমি দখল করে সমাবেশ করা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ অভিযান শুরু করতে গেলে এ সহিংসতা শুরু হয়। সেখানে অভিযান চালাতে পুলিশ শব্দ বোমা ও পেপার স্প্রে ব্যবহার করে। প্রাথমিকভাবে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এ অভিযান চালানো হয়। এতে কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী সেখান থেকে পালিয়ে যায় এবং ১১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
আন্দোলনকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধে নির্মমতার অভিযোগ এনেছেন। এক বিক্ষোভকারী বিবিসিকে জানান, পুলিশ সোনিক ডিভাইস ব্যবহার করেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। রাবার বুলে ও গুলি করা হয় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে। তিনি বলেন, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। এমনকি তারা ১৫ বছরের বালকের ঘোড়াকে গুলি করে হত্যা করে।
তিনি জানান, এই তেলের পাইপলাইন হলে তাদের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। ফলে তারা এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।
ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী এক প্রবীণ বিক্ষোভকারী জানান, প্রতিবাদকারীরা পুলিশ দমন ও গণগ্রেফতারে ভীত নয়। তিনি বলেন, তারা যদি সবাইকে জেলে ঢুকাতে চায় তাহলে কাল দ্বিগুণ মানুষ জড়ো হবে। যতদিন যাবে প্রতিবাদকারীদের সংখ্যা আরও বাড়বে।
বৃহস্পতিবারের অভিযানের আগেই পুলিশ ২৬০জনের বেশি মানুষকে গ্রেফতার করেছে।
ডাকোটা এক্সেস পাইপলাইনের নির্মাণ কাজ বন্ধের প্রচেষ্টায় বিক্ষোভকারীরা সপ্তাহান্তে দু’টি রাস্তা বন্ধ করে দেয় এবং বেসরকারি জমি দখল করে ক্যাম্প স্থাপন করে।
উল্লেখ্য, এ পাইপলাইন প্রকল্প বন্ধে ন্যাটিভ আমেরিকানরা ও তাদের সমর্থকরা এক মাস ধরে বিক্ষোভ করে আসছে। সূত্র: বিবিসি।
/এএ/