X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিশু বিক্রির অভিযোগে ভারতের ‘মাদার তেরেসা’ হোমে তদন্তের নির্দেশ

বিদেশ ডেস্ক
১৭ জুলাই ২০১৮, ১৯:১৫আপডেট : ১৭ জুলাই ২০১৮, ২০:৪০

ভারতের মাদার তেরেসা প্রতিষ্ঠিত সবগুলো শিশুপরিচর্যা কেন্দ্রে শিশু বিক্রি বিষয়ে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। অভিযোগ উঠেছে, দত্তকের নাম করে শিশুদের বিক্রি করে দিচ্ছেন কেন্দ্রের কর্মীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

শিশু বিক্রির অভিযোগে ভারতের ‘মাদার তেরেসা’ হোমে তদন্তের নির্দেশ
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিচর্যা কেন্দ্রগুলো পরিচালনা করে ক্যাথলিক মিশনারি। নারী ও শিশু মন্ত্রণালয় থেকে সবগুলো কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চলতি মাসেই ঝাড়খন্ডে একটি কেন্দ্র থেকে শিশু বিক্রির অভিযোগে এক নান ও সমাজকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর ওই কেন্দ্র বন্ধও করে দেওয়া হয়। সিস্টার কোনসালিয়া বালসা এবং সমাজকর্মী অনিমা ইনদোয়ারের বিরুদ্ধে তিনটি শিশু বিবক্রির অভিযোগ ছিলো। চতুর্থ শিশু বিক্রির চেষ্টার সময় ধরা পড়ে যান তারা।

মার্চে জন্ম নেওয়া দুই মাস বয়সী ওই শিশুকে ১৩২৫ পাউন্ডে বিক্রি করার চেষ্টা করেন তারা, বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। বাচ্চাটিকে নিতে চাওয়া দম্পতি জানান, তাদের বলা হচ্ছিলো যে বৈধভাবেই দত্তক দেওয়া হচ্ছে বাচ্চাটিকে। আর হাসপাতাল খরচবাবদ এই অর্থ নেওয়া হচ্ছে।

এক বিবৃতিতে নারী ও শিশু মন্ত্রণালয় জানায়, ঝাড়খন্ডের মিশনারি চ্যারিটির দত্তক নেওয়ার অনিয়মের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি আমলে নিয়ে মন্ত্রী মানেকা গান্ধী সারাদেশের মিশনারি চ্যারিটিগুলোর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

১৯৫০ সালে মাদার তেরেসা এই দাতব্য সংস্থাগুলো প্রতিষ্ঠা করেন। সরকারের সিদ্ধান্তে তারা কোনও মন্তব্য করেননি। তবে আগে জানিয়েছিলো তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তারা। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা ঝাড়খন্ডে হওয়া ঘটনায় বিস্মিত। এটা একদমই উচিত হয়নি। এটা আমাদের আদর্শের পরিপন্থী। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

পুলিশ জানায়, সিস্টার বালসা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। কিন্তু ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাঞ্চির বিশপের দাবি, চাপ প্রয়োগ করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে তার। তার অভিযোগ, পুলিশ মাদার তেরেসার অনুসারীদের সঙ্গে সন্ত্রাসী চক্রের মতো আচরণ করছে।

পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক নেতারাও দাবি করছেন যে এটা ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির নেওয়া খ্রিস্টানবিরোধী পদক্ষেপ। হিন্দুত্ববাদ আদর্শ থেকেই এমনটা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

২০১৫ সালে এই মিশনারিগুলো দত্তক দেওয়া সুবিধা বন্ধ করে দেয়। সেবছর সরকারি নির্দেশ দিয়েছিলো এখন থেকে একা, বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ারাও শিশু দত্তক নিতে পারবেন।

ভারতের শিশুরক্ষায় গঠিত জাতীয় কমিশন জানায়, দেশটির ২ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি অনুমোদনসহ ও অনুমোদনহীন শিশুপরিচর্যা কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু এতিমখানা রয়েছে প্রায় ৩ কোটি।

২০১৬ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১৫ হাজার বাবা-মা দত্তক নেওয়ার অপেক্ষায় থাকলেও এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ২ হাজার ৬৭১ জন। আইনি জটিলতায় দত্তক নেওয়ার অনুমতি পেতে প্রায় চার বছর সময় লেগে যায়। আর এজন্য গোপনে অবৈধভাবে চলে শিশু বিক্রির এই ব্যবসা।

কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে তারাও জানেন এই বাজারের পরিসর কত বড়। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ এমন একটি কেন্দ্রের প্রধানকে গ্রেফতার করেছিলো যাদের বিরুদ্ধে ১৭টি শিশু বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।

 

/এমএইচ/
সম্পর্কিত
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট কাল
ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য খালাস করে গেলেন যে নারী ট্রাকচালক
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা