X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে ট্রাম্প ও মেলানিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা: গার্ডিয়ান

বিদেশ ডেস্ক
১৩ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৩৯আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ২২:০০

বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার স্ত্রী ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। ট্রাম্প আমেরিকা ফার্স্ট নীতিতে বিশ্বাস করলেও তা থেকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন মেলানিয়া। গত সপ্তাহে সংবাদমাধ্যম এবিসি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেলানিয়ার এমন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে। ট্রাম্পের অভিবাসন সীমিত করার অবস্থানের বিপরীতের দাঁড়ানোর মাধ্যমে তিনি নিজের এমন দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ করেছেন বলে মনে করছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প

গত সপ্তাহে কেনিয়ায় সংবাদমাধ্যম এবিসি’র টম লামাসকে সাক্ষাৎকার দেন মেলানিয়া ট্রাম্প। সাক্ষাৎকারে চলমান #মি টু আন্দোলন বিষয়েও নিজের অবস্থান তুলে ধরেন মেলানিয়া। তিনি বলেন, ‘যদি কাউকে কোনও কিছু নিয়ে অভিযুক্ত করা হয়, তাহলে সেটা ঠিক না...তারা যেমনটি বলছে, নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তুমি অপরাধী, আমি এতে বিশ্বাস করি না’। তিনি বলেন, ‘আমি নারীদের পাশে দাঁড়াবো কিন্তু আমাদের প্রমাণ দেখানোর প্রয়োজন রয়েছে’। 

বিশ্বে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে মেলানিয়া বলেন, ‘আমি মনে করি বিশ্বকে এটা দেখানো জরুরি যে, আমেরিকা সব বিবেচনা করে, এই প্রশাসন বিবেচনা করে ও  আমিও বিবেচনা করি। যখন অন্য মানুষদের আরও বেশি সুযোগ থাকবে তখন বিশ্ব আরও মুক্ত হবে’। তার এই মত তার স্বামীর গত মাসে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে প্রকাশ করা মতের চেয়ে ভিন্নতর। সেখানে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বায়নের আদর্শ বাতিল করেছে।

আফ্রিকার চার দেশ সফরের সময়ে ফার্স্ট লেডি যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) ভূমিকাকে দৃষ্টিগোচর করান। মালাউয়িতে সংস্থাটির সহায়তায় পরিচালিত একটি স্কুল পরিদর্শনের সময় তিনি ১৪ লাখ বই উপহার দেন। ওই সংস্থায় অর্থ বরাদ্দ কমাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুইবার চেষ্টা করেছেন। তবে কংগ্রেসের অনুমোদন না পাওয়ায় তাতে সফল হননি। এই বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে একমত কিনা জানতে চাইলে মেলানিয়া বলেন, ‘তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ইউএসএআইডি দেশগুলোর আত্ম-নির্ভরশীল হতে সহায়তা করছে আর এতে দীর্ঘ সময় লাগবে। এখনও তাদের সহায়তা করে যাওয়া দরকার। কিন্তু আমরা দেখবো’।

আফ্রিকা সফর বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে তিনি কী বলবেন জানতে চাইলে মেলানিয়া  বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা, আমি যা দেখেছি ও জেনেছি তা তাকে জানাবো’। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে পরিবার থেকে শিশুদের আলাদা করা নিয়ে প্রেসিডেন্টের মনোভাব পরিবর্তনে তিনি ভূমিকা রাখতে পেরেছিলেন বলেও মনে করিয়ে দেন মেলানিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে স্বচ্ছন্দেই বলেছিলাম। আমি বলেছিলাম যে, এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয় না। আর তিনিও একই রকম মনে করেছিলেন।’

অভিবাসীদের বাবা-মাকে যুক্তরাষ্ট্রে  আনতে দেওয়া উচিত কিনা জানতে চাইলে মার্কিন ফার্স্টলেডি বলেন, তিনি তাদের আনার পক্ষে আর প্রেসিডেন্টও বিষয়টিতে একমত। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় তিনিও একইরকম বিশ্বাস করেন। এই অভিবাসন শৃঙ্খল তিনি পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চান না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মানুষদের পরীক্ষা করে দেখার দরকার রয়েছে, এছাড়া আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা আমাদের ব্যবস্থায় বিশ্বাস রাখে’।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বারবার জোর দিয়ে অভিবাসন শৃঙ্খলের বিরুদ্ধে বলে আসছেন। তিনি বলছেন, দম্পত্তি এবং ছোট শিশুদের স্পন্সরশিপ সীমিত করা উচিত। জানুয়ারিতে দেওয়া স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে তিনি বলেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার জরুরি কারণ এটা শুধুমাত্র আমাদের অর্থনীতির জন্য নয় বরং আমাদের নিরাপত্তা এবং আমেরিকার ভবিষ্যতের জন্যও দরকার’। মার্কিন ফার্স্ট লেডির নিজের বাবা-মা অবশ্য অভিবাসন শৃঙ্খলের আওতায় চলতি বছরেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়েছেন।

অনলাইনে ও বাস্তব জীবনে স্বামীর সব কাজের সঙ্গে একমত নন জানিয়ে মেলানিয়া বলেন, ‘তিনি যা পোস্ট করেন তার সঙ্গে সবসময় একমত নই। আমি তাকে বলেছি যে, তার পদক্ষেপ শুধু তারই পদক্ষেপ।’ তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে, অনলাইনে আক্রমণের বিষয়ে কথা বলতে গেলে আমি সমালোচিত হবো। কিন্তু তা সঠিক কাজ করা থেকে আমাকে বিরত রাখতে পারবে না।’

এবিসি নিউজকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প

নিজের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান সম্পর্কে মেলানিয়া বলেন, ‘তিনি আমাকে কখনও এটা করতে নিষেধ করেননি। তিনি বুঝতে পারেন যে, টুইটারে তিনি খুবই কঠিন। কিন্তু তিনিও এটারও বোঝেন যে, আমি পরবর্তী প্রজন্ম ও সন্তানদের সাহায্য করতে চাই।’

সাক্ষাৎকারের কোনও সময়ই লামাস ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অন্য নারীর সম্পর্কের বিষয়ে মেলানিয়ার কাছে জানতে চাননি। তবে এক পর্যায়ে লামাস জানতে চান হোয়াইট হাউসের আলাপকালে ট্রাম্প কখনও কোনও কিছুর জন্য তার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন কিনা। জবাবে মেলানিয়া জানান, তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ফার্স্ট লেডি। কিন্তু একই সঙ্গে একজন মা ও একজন স্ত্রী। তাই আমি আমার কিছু বিষয় নিজের জন্যই গোপন রাখবো। তাই আমি সেগুলো সেভাবেই রাখবো।’ 

বৃহস্পতিবার ফার্স্ট লেডির কর্মচারীরা এবিসি’কে তার উত্তরটির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘হোয়াইট হাউসের প্রবেশের পর থেকে সংবাদমাধ্যমের বাজে কথা ও মতামতের জন্য প্রায়ই মিসেস ট্রাম্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট।’

/জেজে/আরএ/
সম্পর্কিত
হামাসের সংশোধিত প্রস্তাব গাজায় যুদ্ধবিরতি অচলাবস্থা ভাঙতে পারে: যুক্তরাষ্ট্র
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
ইসরায়েল কি যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হবে?
সর্বশেষ খবর
‘কোন মার্কায় ভোট দেবে’ পাশে দাঁড়িয়ে বলে দিচ্ছেন আরেকজন
‘কোন মার্কায় ভোট দেবে’ পাশে দাঁড়িয়ে বলে দিচ্ছেন আরেকজন
নিজ্জার হত্যা: কানাডার আদালতে হাজির অভিযুক্ত তিন ভারতীয়
নিজ্জার হত্যা: কানাডার আদালতে হাজির অভিযুক্ত তিন ভারতীয়
পাওল নাটোর্পের রবীন্দ্র-মূল্যায়ন
পাওল নাটোর্পের রবীন্দ্র-মূল্যায়ন
ঢাকাই সিনেমায় রবীন্দ্রনাথ...
কবিগুরুর ১৬২তম জন্মজয়ন্তীঢাকাই সিনেমায় রবীন্দ্রনাথ...
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
শেখ হাসিনাই হচ্ছেন ভারতে নতুন সরকারের প্রথম বিদেশি অতিথি
শেখ হাসিনাই হচ্ছেন ভারতে নতুন সরকারের প্রথম বিদেশি অতিথি
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা