সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দি অধ্যুষিত এলাকায় তুরস্কের অভিযান শুরু হওয়ার পর সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর হাতে বন্দি থাকা আইএস যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা পালাতে শুরু করেছে। এসডিএফ এর আগে সতর্ক করে জানিয়েছিল, বন্দি আইএস যোদ্ধাদের পাহারা দেওয়া তাদের অগ্রাধিকার নয়। সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযানের পঞ্চম দিনে আইএসের পরিবারের সদস্যদের পালানোর খবর জানালো ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
শনিবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে কুর্দিদের এক সিনিয়র কর্মকর্তা রেদুর জেলিল জানান, সীমান্তে তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কারণে তাদের নিয়ন্ত্রণে আইএস যোদ্ধাদের বন্দি শিবিরের নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, আইএসের বন্দি যোদ্ধাদের পাহারা দেওয়া এখন আমাদের অগ্রাধিকার না। যাদের মনে হয় এসব বন্দিদের আটক রাখা দরকার, তাদেরকে দায়িত্ব নেওয়া ও সমাধান বের করার জন্য স্বাগত জানাচ্ছি।
এসডিএফ কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা আমাদের শহর ও জনগণকে সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেবো।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যালোচনাকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, বন্দিশিবিরে থাকা আইএস যোদ্ধাদের সঙ্গী ও সন্তানসহ শতাধিক লোক পালিয়ে গেছে।
এসডিএফের তথ্য অনুসারে, সাতটি বন্দিশিবিরে আইএসের সন্দেহভাজন ১২ হাজারের বেশি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত চার হাজার বিদেশি নাগরিক। এসব বন্দি শিবির কোথায় অবস্থিত তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হয়, কয়েকটি তুর্কি সীমান্তের কাছাকাছি স্থান রয়েছে।
তুরস্ক জানিয়েছে, তাদের অভিযানের সময় যদি আইএস বন্দিদের পাওয়া যায়, তাহলে তাদের দায়িত্ব নেবে দেশটি।
৭ অক্টোবর সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয় তুরস্ক। পরে ৯ অক্টোবর সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ‘পিস স্প্রিং অপারেশন’ শুরু করে আঙ্কারা। অভিযানের অংশ হিসেবে তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি ইউফ্রেতাসের পূর্বদিকে প্রবেশ করে। তুর্কি অভিযানে সহযোগিতার জন্য তারা অগ্রসর হচ্ছে। পরে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় অভিযানে বিমান হামলা ও স্থল অভিযান জোরালো করে তুরস্ক। এতে তিন শতাধিক ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে আঙ্কারা। মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, এ অভিযানে ১১ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।