রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরের নীলা হোটেলে খুন হওয়া নারীর দুই বছরের শিশু নাতনি তার খুনির কাছে রয়েছে বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। ওই নারীর হত্যাকারী সেই যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি এখনও। দুই বছরের সেই শিশুটির কী অবস্থা, তাও জানতে পারেনি পুলিশ। তবে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মঙ্গলবার ভোররাতে উত্তরা পশ্চিম থানার আব্দুল্লহপুরের আবাসিক নীলা হোটেলের চারতলায় গলা কেটে হত্যা করা হয় পুষ্প রানী (৪৫) নামে এক নারীকে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ বুঝে নেন স্বজনরা।
নীলা হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতায় দেখা গেছে, সোমবার বিকালে নিহত ওই নারী দুর্জয় নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে হোটেলে ওঠেন। তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়েছিলেন। সঙ্গে একটি মেয়ে শিশু ছিল। পরিচয় গোপন করায় প্রথমে তাদের পরিচয় জানা না গেলেও পরবর্তী সময়ে পুলিশ জানতে পারে, নিহতের নাম পুষ্প রানী। তার বাবা মৃত হরিভক্ত চন্দ্র শীল। তার স্বামী দিনেশ চন্দ্র শীল। বাড্ডায় তাদের সেলুন রয়েছে। গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ, সাখবুনিয়া। থাকতেন বাড্ডা লিংকরোড, গুদারাঘাটে।
উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদশক (এসআই) জানে আলম দুলাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যার সঙ্গে পুষ্প রানী হোটেলে উঠেছিলেন, সে তার প্রকৃত পরিচয় দিয়ে হোটেলে রুম বরাদ্দ নেয়নি।’
পুলিশ জানায়, তার প্রকৃত নাম লিটন সরকার। গাজীপুরে সে তার পরিবার নিয়ে থাকতো। তার দুই বাচ্চা রয়েছে। আমরা তার বিস্তারিত পরিচয় পেয়েছি। পুষ্প রানীকে হত্যার পর তার নাতনিকে নিয়ে লিটন পালিয়েছে। পুলিশ তার এখনও অবস্থান নিশ্চিত হতে পারেনি। পুলিশ আরও জানায়, লিটনের শ্বশুরের সঙ্গে পুষ্প রানীর স্বামীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের বাসায় যাওয়া-আসা আছে। এভাবে লিটনের সঙ্গে পুষ্প রানীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পুষ্প রানীর মেয়ের ভাশুর মাদব চন্দ্র শীল বলেন, ‘সোমবার বিকালে পুষ্প রানী লিটনের সঙ্গে বের হন। এক এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলবে বলে তারা বাসায় জানান।, এতে পুষ্প রানীর স্বাক্ষর লাগবে বলে তাকে নিয়ে যায় লিটন। তখন পুষ্প রানী তার বড় মেয়ের সন্তান মনীষা (২) কে সঙ্গে নিয়ে বের হন। এরপর তারা আর ফিরে আসেননি। পরে আমরা খুঁজতে খুঁজতে বাড্ডা থানায় যাই। সেখান থেকে সংবাদ পেয়ে, মর্গে এসে লাশ দেখে শনাক্ত করে নিয়ে যাই।’ তিনি বলেন, ‘মনীষাকে আমরা এখনও পাইনি। আমাদের ধারণা সেই লিটনই শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
পড়ুন এ সংক্রান্ত আরও খবর: আবাসিক হোটেল থেকে নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
/এমএনএইচ/