জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ ও বরিশাল রেঞ্জ পুলিশ বাড়িতে বাড়িতে ফরম বিতরণ শুরু করেছে। আর ৪ থানায় ইতোমধ্যে এক হাজারের বেশি ফরম পূরণ করে জমা দিয়েছেন ভাড়াটিয়ারা।
এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন জানান, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান কঠোর। তারা ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম বিতরণ শুরু করেছেন। পাড়ায়-মহল্লায় জঙ্গিবাদ বিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে। মসজিদে মুসুল্লীদের মধ্যে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের দায়িত্ব পুলিশের একার নয়, এ কাজে সকলের এগিয়ে আসা উচিত।
ভাড়াটিয়া ফরম বিতরণে কোতোয়ালী পুলিশের দায়িত্বে থাকা এস আই তাহের জানান, তিনি অন্তত ২ হাজার পরিবারে কাছে এই ফরম বিতরণ করেছেন। সবাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
নগরীর কাটপট্টি রোডের বাসিন্দা আলেয়া বেগম জানান, তিনি ফরম পেয়েছেন। তবে বাড়িতে পুরুষ সদস্য না থাকায় জমা দিতে পারেননি।
তবে অনেকেই ফরম না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। নগরীর কাউনিয়া ক্লাবের বাপ্পী মজুমদার জানান, এখনও ভাড়াটিয়া ফরম তিনি পাননি।
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আওলাদ হোসেন জানান, সব এলাকায় ভাড়াটিয়া ফরম বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয়দেরও সম্পৃক্ত করে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে ইসলামের আহ্বান শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও ইমামদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল বিভাগীয় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার মো. ইউনুছ। বিশেষ অতিথি ছিলেন- বরিশাল-৩ আসনের সংসদ সদস্য শেখ মো. টিপু সুলতান এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন।
বরিশাল জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- জামে এবায়দুল্লাহ্ মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মির্জা নুরুর রহমান বেগ, ঢাকা তেজগাঁও মাদ্রাসা আশরাফুল উলুমের অধ্যক্ষ মাওলানা আবু সুফিয়ান জাকি, ইসলামী ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও সহকারী পরিচালক মো. আলী জিন্নাহ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর যারা দেশ পরিচালনা করেছে তারা জাতিকে বিপদগামী করেছে। ফিতনা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও বিশৃঙ্খলা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আল্লাহ ফিতনা বা সন্ত্রাস হত্যার চেয়ে ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে গণ্য করেন। নরহত্যার অপরাধ অথবা পৃথিবিতে ফ্যাসাদ সৃষ্টির কারণ ব্যতীত হত্যা করলে সে যেন গোটা মানবতাকে হত্যা করল। আর কেউ কারও প্রাণ বাঁচালে সে যেন গোটা মানবজাতিকে বাঁচালো।
বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে ইহুদী-নাসারাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আসছে জামায়াত-শিবির মুনাফিক চক্র। আইএস’র মতো জামায়াত-শিবিরও কৌশলে বাংলাদেশের যুব সমাজকে ব্যবহার করছে। এই তরুণ যুব সমাজকে পবিত্র কুরআন-হাদিসের কিছু বিক্ষিপ্ত আয়াত ও বানী শুনিয়ে জিহাদের অপব্যাখ্যা দিয়ে মগজ ধোলাই দিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের প্রতি অনুপ্রাণিত করছে। তাদের মাধ্যমেই আবার কিলিং মিশন বাস্তবায়ন করছে চক্রটি।
/এসএনএইচ/আপ-এআর/