আপনার সন্তান কি জানে, কত ত্যাগ, তিতিক্ষা আর রক্তপাতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা? কেমন করে বিজয় ছিনিয়ে আনা হয়েছিল কিংবা কত স্বজনের কান্নার বিনিময়ে পাওয়া এই দেশ, সেই গল্প কি আমরা জানি?
হয়তো আমরা জানি কিন্তু আমাদের সন্তানদের কাছে তো পৌঁছাতে হবে বিজয়ের গল্প। সেই গল্প হোক প্রতিদিন। এমনটাই বললেন শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের সন্তান শাওন মাহমুদ।
বিজয়ের গল্প জানতে যখন আমরা তার বাসায় পৌঁছালাম তখন ভর দুপুর। দুপুর সাধারণত ভীষণ রোদ্রজ্জোল হয়, কিন্তু আজ কুয়াশা ঘেরা। দুপুরটি অনেক বিষণ্ন। যেন হারিয়ে যাওয়া শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য কাঁদছে গোটা প্রকৃতি।
আমাদের দেখে হইহই করে উঠলেন শাওন মাহমুদ। একদিনের জন্য তাকে হাজিরা দিতে হয়েছে গণমাধ্যমগুলোতে। বলতে হয়েছে বিজয়ের গল্প। শুধু এই একদিন তারপর সবাই ভুলে যাবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। তারপর আবার অপেক্ষা আগামী বছরের জন্য।
বিজয়ের আগে কি নির্মমভাবে পিতৃহীন হয়েছিলেন সেই গল্পটা তিনি যেনও এড়িয়ে যেতে চান। বিড়বিড় করে বলে চলেন, আজ কাল পরশু বাংলাদেশের এক গভীর ক্ষত মাখা সময়। এ দিনগুলো পার করা খুবই কষ্টকর, কঠিন, করুণ।
কেনও আজই জানাতে হবে, কেনও প্রতিদিন নয়। শাওন মাহমুদ বলেন, বিজয়ের গল্প হৃদয়ে ধারণ করার গল্প। একদিনে এটি বলে শেষ করবার নয়।
প্রতিদিন একটু একটু করে বলতে হবে, জানতে হবে শুনতে হবে। তাহলেই এই প্রজন্ম আত্মস্থ্য করবে বিজয়ের গল্প। নিত্যদিন জানাতে হবে। শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোতে নিয়ে যেতে হবে ভবিষ্যত প্রজন্মকে। পড়াতে হবে ইতিহাসের বই। নিয়ে যেতে হবে তাদের কাছে যারা যুদ্ধের গল্প বলতে জানে।
শাওন মাহমুদ তার সন্তানতুল্যদের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা যদি হৃদয়ে ৫২ আর ৭১ এর লড়াই আর সংগ্রামকে ধারণ করতে পারো তাহলে হেরে যাবে না। কোনওদিন তোমরা বিপথগামী হবে না। আর তখনই তোমরা শ্রদ্ধা করতে পারবে সেই মহান বীর যোদ্ধাদের…
***বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ অনুরোধে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের সন্তান শাওন মাহমুদ। নওরিনকে শুনিয়েছেন বিজয়ের গল্প। এভাবেই তিনি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে জানিয়ে যেতে চান বিজয়ের গল্প।
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন।
/এফএএন/