লোহিত সাগরে একাধিক হামলার শিকার একটি পণ্যবাহী জাহাজে আগুন ধরে গেছে। সেটি এখন পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। রবিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে যুক্তরাজ্যের সামরিক কর্তৃপক্ষ। জাহাজটিতে বন্দুক, রকেটচালিত গ্রেনেড (আরপিজি) এবং সম্ভবত ড্রোনবোট দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে হামলার ধরন ও মাত্রা দেখে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ওপর সন্দেহ করা হচ্ছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ইউকে মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস (ইউকেএমটিও) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটিতে আগুন লেগেছে এবং এটি পানি ঢুকে পড়ছে। নাবিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রে জানায়, আটটি ছোট স্পিডবোট জাহাজটিতে প্রথম হামলা চালানো হয়। পরে জাহাজটিকে লক্ষ্য করে ড্রোনবোট পাঠানো হয়। এগুলোর মধ্যে দুটি বিস্ফোরিত হয়ে জাহাজে আঘাত হানে। জাহাজে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা আরও দুটি ড্রোনবোট ধ্বংস করেছে।
ইউকেএমটিও জানিয়েছে, ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত হোদেইদা শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
হুথি-নিয়ন্ত্রিত উপগ্রহ চ্যানেল আল-মাসিরাহ হামলার খবর স্বীকার করেছে। তবে তারা হামলার দায় স্বীকার করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক পঞ্চম নৌবহর এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড বলেছে, তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।
গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় লোহিত সাগরে বেশ কিছু বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তবে মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের ওপর বড় ধরনের বিমান হামলা চালানোর পর তারা কিছুদিন হামলা থেকে বিরত ছিল।
রবিবার হুথিরা ইসরায়েলের উদ্দেশে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার দাবি করেছে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায় তারা সেটি প্রতিহত করেছে।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত হুথিরা ১০০টির বেশি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে দুটি জাহাজ ডুবে গেছে এবং চারজন নাবিক নিহত হয়েছে। এসব হামলার কারণে লোহিত সাগর করিডোরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এই রুট দিয়ে প্রতিবছর প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য পরিবহন হয়।