X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শহীদ মিনার এখন ময়লার ভাগাড়!

বগুড়া প্রতিনিধি
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:৪৪আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:৪৪

বগুড়ার আদমদীঘিতে সান্তাহার মহিলা কলেজ মোড়ে নির্মিত শহীদ মিনারটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে পরিত্যক্ত হয়ে আছে। অযত্ন ও অবহেলায় এটি নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে। ৪০ বছর আগে নির্মিত শহীদ মিনার সংস্কারে উদ্যোগ না নেওয়ায় জায়গাটি বেহাত হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এলাকার সচেতন জনগণ অবিলম্বে এটি সংস্কারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর এলাকার হাউজিং কলোনিতে বসবাসকারীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ১৯৮০ সালে নিজস্ব অর্থায়নে মহিলা কলেজ সংলগ্ন তিনমাথা মোড়ে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করেন। ভাষা দিবস এলে মহিলা কলেজ, পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উপশহর প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনাইটেড কিন্ডার গার্টেন ও স্থানীয়রা সেখানে শ্রদ্ধা
জানাতেন। তবে গত সাত বছর ধরে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শহীদ মিনারটি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছে। 

স্থানীয়রা জানান, এটা আসলে একটি বাড়ির কোনে থাকা ফাঁকা স্থান। সেখানেই শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন শহীদ মিনারের তিনটি স্তম্ভের মধ্যে দুটি ভেঙে মাটিতে পড়ে রয়েছে। একটি দাঁড়িয়ে থাকলেও সেটি নোংরা কাপড় ও বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। বেদির জায়গাটি ব্যবহার না হতে হতে আবর্জনায় ভরে গেছে। এই শহীদ মিনারটির সামন দিয়ে পরবর্তীতে গেছে পৌরসভার খোলা ড্রেন। আর এই শহীদ মিনারের গুরুত্ব কমার শুরুটাও তখন থেকে। এখন এই খোলা ড্রেন থেকে সারাক্ষণ দুর্গন্ধ ছড়ায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শহীদ দিবস এলেও শহীদ মিনার ও এর আশেপাশের এলাকার কোনও সংস্কার করা হয় না। অবশ্য কয়েকজন জানান, যখন এখানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় তখন আশেপাশে শহীদ মিনার ছিল না। তবে পরবর্তীতে অন্য শহীদ মিনার নির্মিত হওয়ায় শিশু ও এলাকাবাসী সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে যান। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, শহীদ মিনার সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা মেহের আলী বুদা জায়গাটি নিজ দখলে রাখতে চেষ্টা করছেন। এ কারণে তিনি শহীদ মিনারের জায়গাটি টিনের ছাউনি ও বস্তা দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। তার বাড়ি থেকে বেদিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়।

তবে মেহের আলী দাবি করেছেন, শহীদ মিনারের জায়গা তার নিজস্ব। এ জায়গার বদলে শহীদ মিনারটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হলে তার জন্য ভালো হতো।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী জানান, মূলত ভাষা শহীদদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষা বাংলা পেয়েছি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম অঙ্কুর রোপিত হয়েছিল। ভাষা শহীদদের যথাযথ মর্যাদা দিতে এখানে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। এ কারণে এটি একটি পবিত্র স্থান। আর সেখানে ময়লার ভাগাড় তৈরি বা জায়গা দখল করা অমানবিক চিন্তার বিকাশ।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবা হক এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে পরামর্শ দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন বলেন, এ শহীদ মিনার সম্পর্কে তিনি অবগত নন। শহীদ মিনারটি সান্তাহার পৌরসভার অন্তর্গত। তাই এর দেখভাল করার দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের।

সান্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু জানান, তার এলাকায় সরকারিভাবে যেসব শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলোর দেখভালের দায়িত্ব পৌরসভার। ব্যক্তিগত উদ্যোগে হাউজিং কলোনিতে এ শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়েছিলো।

তিনি এটির রক্ষণাবেক্ষণ বা সংস্কার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এলাকাবাসী অবিলম্বে শহীদ মিনারটি সংরক্ষণ ও সংস্কারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৬ এপ্রিল, ২০২৪)
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত যুবলীগ নেতা
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা