তিনটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের অফিস আদেশ ন্যাশনাল আর্কাইভে রাখা, সরকারের কেন্দ্রীয় অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার (জিআরএস) উন্নয়ন ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’র (এপিএ) শতভাগ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করলেও বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করতে পারেনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দেবদাস নাগ এই তিন কর্মসূচি বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই করছেন বলে জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সরকারের ২৫ বছর আগে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের নথি ন্যাশনাল আর্কাইভে রাখতে চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু ২৫ বছর আগের নথি কতটা অক্ষত পাওয়া যাবে তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।
সূত্র জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত উদযাপন কমিটির নেওয়া কর্মসূচির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আর তাই তিনটি বাড়তি সিদ্ধান্ত ‘অতিরিক্ত’ হিসেবেই নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে সরকারের কেন্দ্রীয় অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার (জিআরএস) উন্নয়নে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। উল্লেখ্য, সরকারি বিভিন্ন দফতর বা সংস্থার প্রতিশ্রুত সেবা, সেবা প্রদান এবং সেবা অথবা পণ্যের মান সম্পর্কে ব্যক্তির অসন্তোষ বা মতামত দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় এসব মতামত বিশেষ গুরুত্ব পায় না। এখন থেকে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ কাজে অতিরিক্ত সচিব ড. শাহানাজ আরেফিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখভাল করছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে অভিযোগ বা মতামত দেওয়ার সুযোগ থাকছে। অভিযোগ দাখিলের পর এসএমএস ও ই-মেইলের মাধ্যমে অভিযোগের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কেও জানা যাবে। তবে লগ-ইন না করে অজ্ঞাতনামা হিসেবে অভিযোগ দাখিল করলে পরবর্তী তথ্য পাওয়া যাবে না।
সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বাড়ানো, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ লক্ষ্যে সরকারের সর্বত্র বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বা (এপিএ) শতভাগ বাস্তবায়ন করতে চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জানা গেছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বছরের শুরুতেই এ সম্পর্কিত একটি চুক্তি করে। চুক্তি বাস্তবায়নে সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ সমান অবদান রাখতে পারে না। তবে এর উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারকে আরও জনবান্ধব করে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ করে দিতে চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জানা গেছে, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) মূলত বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিবের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা দলিল। সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি প্রবর্তন করা হয়েছে।
এই চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কৌশলগত উদ্দেশ্য, গৃহীত কার্যক্রম এবং ফলাফল পরিমাপের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক ও লক্ষ্যমাত্রাগুলো রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অর্থবছর শেষ হওয়ার পর ওই বছরের চুক্তিতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রকৃত অর্জন মূল্যায়ন করা হয়।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘কাজ চলছে। চেষ্টা করছি। জাতীয় উদযাপন কমিটির সব কর্মসূচির সঙ্গেই তো কেবিনেট ডিভিশন রয়েছে।’