X
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২

পাঁচবার রঙ বদলায় তুলসীমালা, চাষ হচ্ছে খুলনাতেও

খুলনা প্রতিনিধি
১৫ এপ্রিল ২০২১, ১০:০০আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১৩:৩৯

নাম তার তুলসীমালা। স্থানীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় সুগন্ধী ধানের জাত। শেরপুর জেলার চাষীরা শখের বসে শুরু করলেও এখন এ ধান চাষে আশার আলো দেখছে খুলনার বটিয়াঘাটার চাষীরাও।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসাব মতে, দেশে ২০-২৫ হাজার হেক্টর জমিতে এই ধান চাষ হচ্ছে। এর শতকরা ৫০ ভাগই শেরপুর জেলায়। উচ্চফলনশীল না হলেও এই চালের কদর বেশ। সুগন্ধী কালোজিরার চেয়েও আকারে ছোট সুগন্ধী তুলসীমালা। এ ধানের খড় থেকেও মাঠময় সুগন্ধ ছড়ায়। পল্লীকবি জসীমউদ্দীন তার কবিতায় শালি ও বিন্নি ধানসহ আরও যে কয়টি প্রাচীন সুগন্ধী ধানের উল্লেখ করেছেন, তুলসীমালা তারই একটি বলে ধারণা কৃষিবিদদের।

পদ্মার এপারের ২০টি জেলার গত আমন মৌসুমে এ ধানের প্রথম চাষ হয় খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার দাউনিয়াফাদ গ্রামে। পাশের গুপ্তমারী গ্রামের রণজিৎ মন্ডল ৫ শতক জমিতে এই ধান চাষ করেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান শখের বশে শেরপুর থেকে এই ধানের মাত্র ২ কেজি বীজ সংগ্রহ করে ওই কৃষককে দিয়েছিলেন। চাষের তত্ত্বাবধানও করেন তিনি। জানালেন, ধানটি লবণাক্ত উপকূলীয় এলাকায় হবে কিনা তা নিয়ে শুরুতে সন্দেহ ছিল। কিন্তু বাস্তবে ভালো ফলন হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জানান, গত আমন মৌসুমে ২১ হাজার ৩০৩ হেক্টর জমিতে তুলসীমালার চাষ হয়। এর মধ্যে শেরপুরে চাষ হয় সর্বোচ্চ ১২ হাজার ১৬ হেক্টরে। হেক্টর প্রতি চালের উৎপাদন ১.৫৭ মেট্রিক টন।

বটিয়াঘাটার স্থানীয় রানী স্যালুট, হরকোচ, কাচড়া জাতের ১টি ধান তুলসীমালার ৩টি ধানের সমান। এটা এতোটাই ছোট যে পাকলে ধানের ছড়া দেখে সত্যিই মনে হয় মালা গেঁথেছে কেউ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, তুলসীমালা ধানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ধানে ফুল আসার পর থেকে পাকা পর্যন্ত এটি পাঁচবার রঙ বদলায়। প্রথমে হালকা সবুজাভ, এরপর ছাই রঙ, এরপর হালকা জাম রঙ, এরপর গাঢ় জাম রঙ এবং শেষে কালো ও ছাই রঙ মিশে আরেক রকম হয়।

গাছের উচ্চতা ৫০-৫২ ইঞ্চির মতো হয়। ধানের আয়ু ১১০-১২০ দিন। একটি শীষে ৯০-১২০টি ধান পাওয়া যায়। ৫ শতক জমিতে দেড় মণ পর্যন্ত ধান পাওয়া গেছে। সে হিসেবে একর প্রতি ৩০ মণ ধানের ফলন হওয়ার কথা।

এরইমধ্যে খুলনার অনেকেই এ ধান চাষ করতে বীজের চাহিদা জানিয়েছেন। এর মধ্যে এ বছর ৫-১০ জনকে কিছু বীজ দিয়ে চাষ সম্প্রসারণে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছে অধিদফতর।

বাজারে তুলসীমালা চাল খুব কমই পাওয়া যায়। তবে ময়মনসিংহ বিভাগে পাওয়া যায় বেশি। প্রতিকেজি চাল ১২০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়। দেশি জাতের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া চাল।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. মনিরুল ইসলাম তাঁর ল্যাবে এই ধান নিয়ে অধিকতর গবেষণা করে এ চালের কিছু বৈশিষ্ট্য অন্য কোনও জাতে প্রবেশ করানো যায় কিনা সে ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি তুলসীমালার টিস্যুকালচার করবেন বলেও জানিয়েছেন।

/এফএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (৭ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (৭ জুলাই, ২০২৫)
মধ্যরাতে সংবর্ধনায় বিশ্বকাপ স্বপ্নের কথা বললেন ঋতুপর্ণা ও আফঈদারা 
মধ্যরাতে সংবর্ধনায় বিশ্বকাপ স্বপ্নের কথা বললেন ঋতুপর্ণা ও আফঈদারা 
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদ জয় করবো: নাহিদ ইসলাম
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদ জয় করবো: নাহিদ ইসলাম
একটি দলের কারণে ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা আটকে যাচ্ছে: আখতার
একটি দলের কারণে ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা আটকে যাচ্ছে: আখতার
সর্বাধিক পঠিত
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক 
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক 
ফার্মেসিতে ওষুধের আড়ালে ‘ট্যাপেন্টাডল’ বিক্রির অভিযোগ, আটক ৫
ফার্মেসিতে ওষুধের আড়ালে ‘ট্যাপেন্টাডল’ বিক্রির অভিযোগ, আটক ৫
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
সেই ব্যাংক কর্মকর্তার খোঁজ মিলেছে
সেই ব্যাংক কর্মকর্তার খোঁজ মিলেছে