সরকারের অপরিণামদর্শী নীতির কারণে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম এই নেতা বলেন, ‘করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা সরকারের অপরিণামদর্শী নীতিরই ফল। একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে গিয়ে সরকার এক ঝুড়িতে সব ডিম রেখেছিল।’
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলীয় সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘ভারতে তীব্র করোনা সংকট সৃষ্টি হয়েছে, কজেই নিজ দেশের প্রয়োজন না মিটিয়ে অন্য কাউকে ভ্যাকসিন দেবে না, সেটাই স্বাভাবিক। সরকার ভালোভাবে যাত্রা শুরু করলেও মাঝপথে তরী ডোবার উপক্রম হয়েছে। সরকার এখন চারিদিকে পথ খুঁজচ্ছে।’
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি প্রসঙ্গে সমাবেশে মেনন বলেন, ‘অক্সিজেনের ক্ষেত্রেও মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠান এবং ভারতের ওপর নির্ভরতা একই সংকট তৈরি করছে। বাজেট বরাদ্দ থাকলেও দুর্নীতির কারণে গত একবছরে আইসিইউ, সেন্টাল অক্সিজেন ব্যবস্থা-কিছুই করা হয়নি। এ বছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে দশ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছিল। এর কতটা ব্যবহার হয়েছে, আর কতটা “নয় ছয়” হয়েছে তা তদন্তের দাবি রাখে।’
তিনি বলেন, ‘গত বছরের অঘোষিত লকডাউনে “দিন এনে দিন খাই” মানুষগুলো কিছুটা সহায়তা পেয়েছিল। এবার সেটা না পাওয়ার কারণে গরিব মানুষ খুবই কষ্টে আছে। ইতোমধ্যে প্রথম লকডাউনেই আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে গেছে। এবার সেটা কোন পর্যায়ে যাবে তা এখনই বলা যাবে না।’
সরকারের ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা মোকাবিলার প্রসঙ্গ টেনে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সরকার ও সরকারি দল ঐক্যবদ্ধভাবে সংক্রমণ মোকাবিলার কথা বললেও সেটা কথার কথা। তারা বরং হেফাজতের সঙ্গে সমঝোতার সূত্র খুঁজতে বেশি আগ্রহী। জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে কেবল আমলাতন্ত্রের ওপর নির্ভর করে করোনা মোকাবিলার নীতি দেশে যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি করেছে, তাতে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ বিপদাপন্ন। উন্নয়নের গাড়ির গতি পাওয়ার বদলে গর্তে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
ওয়ার্কার্স পার্টি ঢাকা মহানগর আয়োজিত ওই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আবুল হোসাইন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক কিশোর রায়, যুবনেতা মো. তৌহিদ, গার্মেন্টস শ্রমিকনেতা রফিকুল ইসলাম সুজন, গৃহশ্রমিকনেতা মমতাজ বেগম প্রমুখ।