২০১৯ সালের লোকসভায় বিজেপি ভোট পেলেও পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী এলাকা ফের একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে গেছে। নাগরিকত্ব আইন ২০১৯ (সিএএ) এবং এনআরসির ভয়েই বিজেপি থেকে আদিবাসীরা মুখ ফিরিয়েছেন বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।
২০২১ সালের বিধানসভার যা ফলাফল তাতে স্পষ্ট, রাজ্যের বহু আদিবাসী এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস জয় পেয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা জয়ের জন্য বহু চেষ্টা করলেও বিজেপির ওপর ভরসা রাখেননি আদিবাসীরা।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ঝাড়গ্রামে বিপুল জয় পেয়েছিল। কিন্তু তিন বছরের মাথায় তা ম্লান হয়ে গেলো। জঙ্গলমহলে চারটি আসনেই জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু ঝাড়গ্রাম নয়, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলিসহ একাধিক আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস ভোট পেয়েছে।
কিন্তু কেন এমন রায়? আদিবাসী নেতা মিলন মান্ডি জানান, এনআরসি-সিএএ থেকে বাঁচতে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন মানুষ। বিজেপি ক্ষমতায় এলে এনআরসি করবে এই ভয় ছিল। তাই পছন্দ না হলেও মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন।
শুধু কি এনআরসির ভয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে আদিবাসীরা নাকি অন্য কারণ আছে? আদিবাসী নেতার জবাব, সারা দেশে বিজেপি দলিত ও আদিবাসীদের সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে তা ভালোভাবে নেয়নি এখানকার ভোটাররা। তাছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক পরিশ্রম করেছেন হারানো ভোট ফিরে পেতে।
জঙ্গলমহলের আইএসএফের পর্যবেক্ষক ও আদিবাসী নেতা লক্ষ্মীকান্ত হাঁসদা বলেন, আমাদের কোনও দল কিছু দেয়নি। বামফ্রন্ট, কংগ্রেস সব দেখেছি। লোকসভায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছে জঙ্গলমহল। কিন্তু জল-জমি-জঙ্গল প্রশ্নে আদিবাসীরা ক্ষুব্ধ। সেই সঙ্গে ছিল এনআরসির ভয়। এছাড়া ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাসহ একাধিক আদিবাসী দল নির্বাচনে যেভাবে লড়ার কথা তা করেনি। ফলে আদিবাসীরা বাধ্য হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আস্থা রেখেছে।