কুমিল্লার দেবিদ্বারে এক বৃদ্ধ দম্পতিকে প্রকাশ্যে কোপানো এবং লাঠিপেটার ঘটনায় কামরুল হাসান (৩০) নামে এক হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শনিবারের ওই ঘটনায় রবিবার (৯ মে) দিবাগত রাতে দেবিদ্বার ভানি গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ দুপুরে তাকে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ওই দম্পত্তি হলেন দেবিদ্বার কটকসার গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান (৭০) ও তার স্ত্রী আসমা বেগম (৬০)। হামলার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে স্ত্রী আসমা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় রবিবার রাতে নির্যাতনের শিকার দম্পতির পুত্রবধূ তাছলিমা বেগম বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কামরুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন কটকসার গ্রামের মো. হারুন অর রশিদের ছেলে মো. ফারুক হোসেন (৪০), তার স্ত্রী পারভীন বেগম (৩০), মা খোরশেদা বেগম ও কামরুলের স্ত্রী শিল্পী বেগম (২৫)।
শনিবার বিকালে ভানি ইউনিয়নের কটকসার গ্রামের হাবিবুর রহমানের বাড়িতে নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে। পরে সোমবার দুপুরে দম্পতিকে নির্যাতনের এক মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সর্বত্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতনের এ ভিডিও দেখে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান অনেকেই।
সোমবার (১০ মে) বিকালে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ফারুক, কামরুল ও তার স্ত্রী পারভিন আক্তার জোর করে আমার বসতঘরের সামনে বাঁশের বেড়া দিতে আসে। যাতে আমরা ঘর থেকে বের হতে না পারি। আমি ও আমার স্ত্রী বাঁধা দিলে ফারুক দা দিয়ে আমার স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করে এবং কামরুল ও তার স্ত্রী পারভিন বেগম বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ি আমাকে ও আমার স্ত্রীকে পেটায়। আমি এ নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এই দম্পতির ছেলে গোলাম রাব্বনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমি প্রবাসে থাকায় অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময়ে আমার বাবা-মা ও পরিবারের প্রতি অন্যায় অত্যাচার করে আসছে। এরই সূত্র ধরে ঘরের সামনে বেড়া দিতে যায়। আমার বাবা-মা বাঁধা দিলে তারা প্রকাশ্যে জনসম্মুখে তাদের ও আমার স্ত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।’
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মো. আরিফুর রহমান জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার হওয়ার ছয় ঘণ্টার মধ্যে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে কাজ করছে পুলিশ।