X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইসরায়েলকে যারা সমর্থন দিচ্ছে একদিন তাদেরও পালা আসবে: এরদোয়ান

বিদেশ ডেস্ক
১৪ মে ২০২১, ২১:০২আপডেট : ১৪ মে ২০২১, ২১:৩৩

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, যারা চুপ থেকে কিংবা প্রকাশ্যে ইসরায়েলি রক্তপাতকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, জেনে রাখা উচিত, একদিন তাদেরও পালা আসবে। শুক্রবার তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল একে পার্টির ভার্চুয়াল সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এরদোয়ান। তিনি বলেন, পুরো দুনিয়া ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞ উপেক্ষা করে গেলেও তুরস্ক কখনও এটি মেনে নেবে না।

এরদোয়ান বলেন, ওআইসি যদি ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে জোরালে অবস্থান না নেয় তাহলে এই জোট তার নিজের অস্তিত্বকেই বিনষ্ট করবে।

এর আগে বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপে এ নিয়ে কথা বলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক ইসরায়েলকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া প্রয়োজন। তাদের এখানে হস্তক্ষেপ করা দরকার। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইসরায়েলকে একটা শক্ত শিক্ষা দেওয়া।

ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের কথা বিবেচনা করতেও পুতিনের প্রতি আহ্বান জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতি দৃশ্যত সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের দিকে যখন হাজার হাজার রকেট ছুটে যায় তখন তাদেরও আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার কথা হয়েছে বলেও জানান বাইডেন।

হামাস বলছে, ফিলিস্তিনিদের বলপূর্বক তাদের পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপনের প্রতিবাদে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে তারা। তবে নিজ বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি বাইডেন। গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে বিমান হামলায় নারী, শিশুসহ বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি নিয়েও কোনও কথা বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এসব উপেক্ষা করে ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষা’র বয়ান হাজির করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য আসার পর ‘যতক্ষণ পর্যন্ত প্রয়োজন’ ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

শুক্রবারও গাজায় দখলদার বাহিনীর তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১১৯ জনকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। নিহতদের মধ্যে ৩১ শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে কমপক্ষে আরও ৮৩০ জন।

গত কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলে পড়ছে দখলদার বাহিনী। শতাধিক বিমান হামলা চালিয়ে সন্তানসম্ভবা নারী, শিশু, সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

বিমান থেকে একের পর বোমা নিক্ষেপ করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। বোমার আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পুলিশের বিভিন্ন ভবন। এমনকি আবাসিক ভবনেও বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী।

পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতে আল আকসা মসজিদের মুসল্লিদের ওপর হামলে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদের দিনও বিমান হামলা থেকে নিস্তার পায়নি গাজার বাসিন্দারা। এক পর্যায়ে বিমান হামলার পাশাপাশি শুরু হয় স্থল অভিযান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি কামান ও ট্যাংক গোলাবর্ষণ শুরু করলে গাজার বহু বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়।

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসও সাধ্যমতো রকেট হামলা চালিয়ে দখলদার বাহিনীকে পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছে। হামাসের শতাধিক রকেট হামলায় এখন পর্যন্ত ছয় ইসরায়েলি এবং দেশটিতে অবস্থানরত এক ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছে। শুক্রবারও ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস যোদ্ধারা।

হামাস প্রধান ইসমাঈল হানিয়া বলেছেন, দখলদার বাহিনীর আগ্রাসনের মুখে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে হামাস। ইহুদিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলের যোদ্ধারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, দখলদার ইসরায়েল যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে তার ঘৃণ্য অপরাধযজ্ঞ বন্ধ না করবে এবং পবিত্র জেরুজালেম শহর ও আল আকসা মসজিদের ওপর দখলদারিত্বের অবসান না ঘটাবে, ততদিন পর্যন্ত হামাস যোদ্ধারা প্রতিরোধ লড়াই অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে।

ইসমাঈল হানিয়া বলেছেন, ‘ইসরায়েল যদি বাড়াতে চায় তাহলে আমরা তার জন্য প্রস্তুত। আর তারা থামতে চাইলে আমরা তার জন্যও প্রস্তুত।’ সূত্র: আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি।

/এমপি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
গাজার ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে ১৪ বছর লাগতে পারে: জাতিসংঘ
মারা গেলো গাজায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!