X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান আইনের সংস্কার কতদূর?

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২১ মে ২০২১, ০৯:০০আপডেট : ২১ মে ২০২১, ১৬:২০

গতি নেই স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর আইন সংস্কার কার্যক্রমে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেই প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি। এদিকে মন্ত্রণালয়ের উইংসগুলো আওতাভুক্ত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের আইন সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। অবশ্য এক্ষেত্রে আইন পর্যালোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে কার্যক্রম। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

দেশে পাঁচ স্তরের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো হলো জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা। এগুলোর জন্য ‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯’, ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯’, ‘জেলা পরিষদ আইন, ২০০০’, ‘উপজেলা পরিষদ (রহিত আইন পুনঃপ্রচলন ও সংশোধন) আইন, ২০০৯’ এবং ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯’ আইন রয়েছে।

এসব আইনের বিধিবিধান অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন ও পরিচালনার যাবতীয় কার্যক্রম চলে। কিন্তু এসব পুরনো আইনগুলো দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে।

এ ছাড়া একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্য প্রতিষ্ঠানের আইনে সাংঘর্ষিক কিছু বিষয়ও মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। যার কারণে মন্ত্রণালয়গুলো থেকে সবগুলো আইন একযোগে সংস্কার করে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম আইন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেনসহ বিশ্বের অনেক দেশ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন আইন প্রবর্তন, আগেরগুলো সংস্কার ও পরিবর্তন করেছে। আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটসহ সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আইনগুলোকে সময়োপযোগী এবং শক্তিশালী করতে কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় বেশ কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে কমিশন গঠনে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে কমিশন গঠনে চূড়ান্ত সন্মতি পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, মন্ত্রণালয় থেকে কমিশন গঠনে যাদের নাম প্রস্তাব এসেছিল তাদের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সায় মেলেনি। এদিকে কমিশন গঠনে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না পেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্ব স্ব উইংগুলো তাদের আওতাধীন আইনগুলো পর্যালোচনা করে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উইংগুলো কাজ শুরু করেছে। তবে, তাদের কাজেও খুব একটা অগ্রগতি নেই। বিশেষ করে লকডাউনের কারণে সব কিছু বন্ধ থাকায় তারা আইন সংস্কারে কাজে হাত দিতে পারছে না।

সংশ্লিষ্ট উইংগুলোর সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, তাদের কেউ কেউ একটি/দুটি করে বৈঠক করে প্রাথমিকভাবে আইনগুলো পর্যালোচনা করেছে। কোনও উইং এখনও কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। আইনগুলোর সংস্কার প্রস্তাব প্রস্তুত করার জন্য আইন সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামতসহ স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের প্রয়োজন হতে পারে। এতে করে আরো বেশখানিকটা সময়ের প্রয়োজন পড়বে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, আইনগুলো সংস্কারের জন্য স্ব স্ব উইংগুলোর প্রধানের নেতৃত্বে কাজ চলছে। যতদূর জানি পৌরসভা আইনের ক্ষেত্রে খানিকটা অগ্রগতি হয়েছে। অন্যগুলোও কাজ চলছে। আমি ইউনিয়ন পরিষদ আইনের দায়িত্বে আছি। এখন যেহেতু ইউপি নির্বাচন চলমান এজন্য এই আইনটি সংস্কারের অগ্রগতি আপাতত নেই। ভোট শেষ হলে আমরা এটা নিয়ে কাজ শুরু করবো।

অতিরিক্ত সচিব দীপক চক্রবর্তী বলেন, আইনগুলো সংস্কারের লক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেকটি উইং তাদের সংশ্লিষ্ট আইনের ওপর কাজ করছে। ৫টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের যে আইনগুলো আছে তার সবগুলোই সংস্কারের কাজ হচ্ছে। তবে কোনটিই এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

নিজে জেলা পরিষদ আইন সংস্কার নিয়ে কাজ করছেন উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন,  ‘উইংগুলো একটা/দুটো বৈঠক করেছে। যেমন আমি জেলা পরিষদ আইন নিয়ে একটি বৈঠক করেছি। সেখানে পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তাদের ডেকে মতামত নিয়েছি। এ রকম আরও একাধিক বৈঠক করতে হবে। আমরা পরিষদের চেয়ারম্যানদেরও ডেকে মতামত নেবো। যতো দ্রুত সম্ভব কাজগুলো করে ফেলবো।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনে অসামঞ্জস্য আছে সেটা বলবো না। মহান সংসদে প্রণীত আইনকে আমরা অসামঞ্জস্য বলতে পারি না। তখনকার প্রেক্ষাপটে আইনগুলো হয়েছিল। সময়ের চাহিদায় হালনাগাদ করছি।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে আরও বলেন, আমরা আইন সংস্কারে কমিশন গঠনের কার্যক্রম চলছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কমিশন গঠনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এটা প্রক্রিয়াধীন। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও আলাদা করে সংস্কার প্রস্তাব প্রস্তুতের উদ্যোগ নিয়েছি। অতিরিক্ত সচিবদের নেতৃত্বে পৃথক কমিটি করেছি। তারা এ নিয়ে কাজ করছেন।

/ইএএইচএস/এফএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সম্পূর্ণ দুর্ভিক্ষের কবলে উত্তর গাজা: ডব্লিউএফপি প্রধান
সম্পূর্ণ দুর্ভিক্ষের কবলে উত্তর গাজা: ডব্লিউএফপি প্রধান
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীর মুখেই কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীর মুখেই কুলুপ
চিনি-লবণ মিশিয়ে নকল প্যাকেটে স্যালাইন তৈরি, গ্রেফতার ৩
চিনি-লবণ মিশিয়ে নকল প্যাকেটে স্যালাইন তৈরি, গ্রেফতার ৩
জিকোর কপালে গভীর ক্ষত, সার্জারির পর হাসপাতালে ভর্তি 
জিকোর কপালে গভীর ক্ষত, সার্জারির পর হাসপাতালে ভর্তি 
সর্বাধিক পঠিত
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
বিসিএসে সফলতায় এগিয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা
বিসিএসে সফলতায় এগিয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে