হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের হেফাজতে তিন মামলায় নয় দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। প্রথম দফায় তাকে সোনারগাঁ থানায় কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্না বেগমের দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘মামুনুল হকের দেওয়া তথ্য পুলিশ যাচাই-বাছাই করছে। গ্রেফতারের পর তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে বিয়ে সংক্রান্ত যেমন তথ্য দিয়েছিলেন, আমাদের কাছেও তেমন তথ্য দিয়েছেন। মামুনুল হক স্বীকার করেছেন তিনি তিনটি বিয়ে করেছেন। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিয়ে কোনও কাজি পড়াননি। এই দুই বিয়েতে কোনও কাবিননামা ও দেনমোহর ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিমান্ড শেষে প্রেস বিফ্রিং করে যাবতীয় তথ্যাদি গণমাধ্যমকে জানানো হবে। মামুনুল হক পুলিশের কাছে অনেক তথ্য দিলেও তিনি এখন পর্যন্ত আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করতে রাজি হয়নি।’
পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণ মামলার বাদীর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক জানিয়েছেন, বাদীর স্বামীর সঙ্গে আগে থেকেই তার পরিচয় ছিল। সেই সূত্রে ২০০৭-০৮ সাল থেকে তাদের পরিচয়। স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে বাদীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়। বাদীকে বিয়ের সময় কোনও কাজি ছিল না, কাবিননামা-দেনমোহরও নেই। একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, বিয়ের সময়ে শর্ত দেওয়া ছিল, তাদের কোনও সন্তান নেওয়া যাবে না এবং সম্পদের ভাগিদার হওয়া যাবে না। মামুনুল স্বীকার করেছেন, ‘কাবিন’ ও ‘দেনমোহর’ ছাড়া মেলামেশা করা ঠিক হয়নি, ভুল হয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম জানান, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি রুমে নারীসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় লোকজন। মামুনুল ওই নারীকে স্ত্রী বলে দাবি করেন। পরে ওই নারী মামুনুলের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন।