রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অফিসে উপস্থিতির হাজিরা খাতা আবারও টাঙিয়ে দিয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সংগঠন ‘অধিকার সুরক্ষা পরিষদ’।
এতে দেখা যায়, উপাচার্য চার বছর তথা এক হাজার ৪৪৭ দিনের মধ্যে অফিসে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২৪০ দিন। অনুপস্থিত ছিলেন এক হাজার ২০৭ দিন শনিবার (০৫ জুন) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে ও শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে দুটি বৃহৎ আকৃতির হাজিরা খাতা টাঙানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান, সদস্য বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক তরিকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।
হাজিরা খাতায় উল্লেখ করা হয়, উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর নিয়োগ হয় ২০১৭ সালের ১ জুন এবং তার মেয়াদ পূর্ণ হয় চলতি বছরের ৩১ মে। হাজিরা খাতায় উপাচার্য হিসেবে তার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। আমরা হাজিরা খাতার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে তার অনিয়মের নমুনা দেখাতে চেষ্টা করেছি। রাষ্ট্র সব বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজোঁ অফিস বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, অথচ তিনি তা উপেক্ষা করে ঢাকার লিয়াজোঁ অফিস খোলা রেখে এখনও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, উপাচার্যের মেয়াদ ৩১ মে শেষ হলেও এখনও তিনি আইন ভঙ্গ করে ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে বসে ব্যাকডেটে (পেছনের তারিখ) অবৈধ নিয়োগ, পছন্দের শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি, বদলিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, যদিও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গত ২৩ মে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে উপাচার্যকে ঢাকার লিয়াজোঁ অফিসে রেস্ট হাউজ ছাড়া অন্য কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনো কাজ করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরও তিনি সেখানে বসে অপকর্ম করছেন।
এ শিক্ষক আবারও ইউজিসির সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করে ঢাকার লিয়াজোঁ অফিস বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংগঠনের সদস্য ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, প্রজ্ঞাপনের তারিখ থেকেই কার্যকর হয় নিয়োগ। প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার এক সপ্তাহ পর যোগদান করেছিলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কিন্তু ওনার (কলিমউল্লাহ) মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রজ্ঞাপনের তারিখ অনুযায়ী। সেই হিসেব করলে আমরা মনে করি, উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরপরও তিনি দাবি করছেন, তার মেয়াদ নাকি ১৪ জুন পর্যন্ত। কারণ তিনি ২০১৭ সালের ১৪ জুন তারিখে যোগদান করেছিলেন বলে দাবি করছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষক।
এ বিষয়ে জানতে নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।