X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কিছুতেই কমছে না সংক্রমণ, সামনে ভয়াবহ সময়!

জাকিয়া আহমেদ
১২ জুলাই ২০২১, ১৪:০০আপডেট : ১২ জুলাই ২০২১, ১৮:০১

লকডাউন চলছে। এর মধ্যেও বাড়ছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যু। টানা লকডাউনের ১১তম দিনেও আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। পরিস্থিতি নিয়ে আশাবাদী হতে পারছেন না কেউই। খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- এভাবে চলতে থাকলে খুব তাড়াতাড়িই পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, “সংক্রমণের সংখ্যা কিছুতেই কমছে না। যে হারে দেশে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে তাহলে আগামী সাত থেকে ১০ দিন পর আর হাসপাতালে বেড পাওয়া যাবে না।”

তিনি বলেন, “সব জেলাতেই কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে। গত মাসে সারা দেশে সংক্রমণের হার অনেক বেশি ছিল। জুন মাসে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী সংক্রমিত হয়েছেন। অথচ শুধু জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে রোগী প্রায় এক লাখ হয়ে গেছে।”

এক সপ্তাহের মধ্যে যদি আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ হয়ে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বতর্মানে দৈনিক শনাক্ত ১১ হাজারের ঘরে আছে। এভাবে চলতে থাকলে এক দিনে ১৪ থেকে ১৫ হাজারে পৌঁছে যেতে বেশি সময় লাগবে না। আর তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সবাইকে বিপদে পড়তে হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমন শঙ্কার সঙ্গে একমত দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও। কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম স্বাস্থ্য অধিদফতরের শঙ্কা প্রসঙ্গে বলেন, “এটা সাবধান বাণী। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের কাজ কেবল সাবধানবাণী দেওয়া না। যত রোগী শনাক্ত হচ্ছে, তাদের প্রত্যেককে কঠোর ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।”

তিনি বলেন, “যে লকডাউন চলছে তা কোন কাজেই আসছে না। কেউ ঘরে নেই, সুযোগ পেলেই সবাই বের হয়ে আসছে। আসলে, রোগীদের শনাক্ত করে আইসোলেশনে নিতে হবে, তার পরিবারের সদস্যদের কোয়ারেন্টিন করতে হবে। সেই সঙ্গে, যারা টেস্ট করতে পারছে না, তাদের জন্য শতভাগ মাস্ক পরার নির্দেশনা দিতে হবে। এই কাজ করতে হবে আরও কঠোরভাবে। নয়তো সংক্রমণের এই চেইন ভাঙ্গা যাবে না।”

তবে এখানে স্বাস্থ্য বিভাগের একার পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, “শনাক্ত হওয়ার পর বাসায় যারা থাকবে তাদেরকে খাবার দিতে হবে। এই খাবার দেওয়ার কাজটা করতে হবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কিংবা প্রশাসন থেকে। একইসঙ্গে শহরেও এটা করতে হবে, যেটা এখন হচ্ছে না। যার কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে রাস্তায় বের হতে হচ্ছে।”

এই লকডাউনে কাজ হচ্ছে কিনা- তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন। তার মতে, শনাক্তের সুফল এখন থেকে কিছুটা পাওয়ার কথা, কিন্তু সেরকম কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, “যেটা আমি ধারণা করেছিলাম, শনাক্তে আজ থেকে একটা স্ট্যাবিলিটি আসবে। কিন্তু তা হয়নি, দেখা যাক আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে কিছু হয় কিনা। ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে যদি লকডাউনের ইফেক্ট না হয়, তাহলে ধরতে হবে চলমান বিধিনিষেধ আরও কঠোর করতে হবে।”

তার মতে, সারা দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে, আর মৃত্যুও হচ্ছে। সেক্ষেত্রে শুধু রাস্তাঘাট বন্ধ করাটা কাজে আসছে না। বিশেষ করে মসজিদগুলোতে ভিড় বন্ধ করা দরকার। এই মহামারি বিশেষজ্ঞ বলেন, ধীরে ধীরে সংক্রমণ শহরের দিকে আসছে।

ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, “রাস্তাঘাটে ভিড় বাড়ছে, কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার চাইতেও অ্যালার্মিং হচ্ছে রাস্তার ধারের, গলির ভেতরের দোকানগুলোতে আড্ডা, মসজিদে নামাজের পরে আড্ডা এবং মানুষের বেড়াতে যাওয়া। মানুষের এইসব ভিড় থেকেই আসলে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।”

পরিস্থিতির ভয়াবহতা টের পেতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আরও একটি পরিসংখ্যানের দিকে তাকানো যায়। তারা জানিয়েছে, গত সপ্তাহে তার আগের সপ্তাহের চেয়ে রোগী শনাক্তের হার বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ আর মৃত্যুহার বেড়েছে ৪৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

/জেএ/এমকে/
সম্পর্কিত
সিলেটে আবারও শুরু হচ্ছে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম
করোনার পর মাধ্যমিকে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে
আরও ৩৯ জনের করোনা শনাক্ত
সর্বশেষ খবর
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!