X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মসৃজন প্রকল্পে লুটপাট, মৃতরাও তুলেছেন টাকা

আতাউর রহমান জুয়েল, ময়মনসিংহ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:০৫আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:০৫

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের হতদরিদ্র মানুষের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা লুটপাট হয়েছে। মৃত ব্যক্তিরাও তুলেছেন বরাদ্দের টাকা। দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের টাকা এভাবে লুটপাট হওয়ায় সরকারের কর্মসৃজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সেলিম ও তার পরিষদের কয়েকজন সদস্য লুটপাটে জড়িত। লুটপাটের বিষয়টি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনেরও (দুদক) তদন্ত দাবি করেছেন তারা। 

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়নে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ম পর্যায়ে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পে জনপ্রতি ৮০০ টাকা হারে বরাদ্দ দেয় সরকার। উপকারভোগী ৬০৭ জনের মধ্যে বেশিরভাগের স্বাক্ষর, টিপসই, ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নেন ইউপি চেয়ারম্যান। স্থানীয় মধুমতি ব্যাংক শম্ভুগঞ্জ-ময়মনসিংহ শাখায় অতিদরিদ্রদের যে তালিকা দিয়ে টাকা তোলা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, একই ব্যক্তির নাম রয়েছে একাধিকবার। এমনকি আট-দশ বছর আগে মারা গেছেন এমন ব্যক্তির নামও রয়েছে উপকারভোগীর এই তালিকায়।’

অভিযোগকারীরা জানান, ‘ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সেলিম ও তার সহযোগীরা বরাদ্দের টাকা লুটপাট করেছেন। করোনাকালে এমন নজিরবিহীন দুর্নীতির ঘটনায় বিস্মিত তারা।’ 

উপকারভোগীদের তালিকায় দেখা গেছে, ছবি বদলে ও একই জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একই ব্যক্তির একাধিক টিপসই ও স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।

চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামের আইয়ুব আলী বলেন, তালিকায় একই ব্যক্তির একাধিক স্বাক্ষর ও মৃত ব্যক্তির নাম দিয়ে বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করা দুর্নীতি। এটি অনেক বড় অপরাধ।

তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, চর বড়বিলা গ্রামের শহর আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম, বজিতপুর গ্রামের হাসেন আলীর ছেলে আব্দুল জব্বার, ফয়জুর রহমান সরকারের ছেলে আব্দুল হাশিম সরকার ও আলালপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে শহীদুল ইসলাম মৃত হলেও তাদের নাম রয়েছে উপকারভোগীর তালিকায়। তালিকায় চরবড়বিলা গ্রামের মিরাশ উদ্দিন, সাহাদুল ইসলাম, আব্দুল আজিজ, চরহরিপুর গ্রামের ফরিদা খাতুন একই জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরধারী।

জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা মহলে দৌড়ঝাঁপ করছেন। কেউ কেউ বলছেন, ভুক্তভোগীদের মুখ বন্ধ রাখতে কারও কারও বাড়িতেও গেছেন চেয়ারম্যান।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মোস্তফা সেলিম বলেন, ‘নির্বাচনে হেরে প্রতিপক্ষ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। প্রশাসনের তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি মেনে নেবো।’

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এলাকাবাসীর অভিযোগ পাওয়ার পর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখছি আমরা। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

/এএম/
সম্পর্কিত
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
মধুমতি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তাসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দুদকের
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা