X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘মুজিববর্ষে জাতিসংঘে বৃক্ষরোপণ দেশের জন্য বিরল সম্মান’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৪ অক্টোবর ২০২১, ১৬:৪৫আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১৮:০৯

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ সদর দফতরে বৃক্ষরোপণ দেশের জন্য বিরল সম্মান বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৪ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন থেকে এসে এ সংবাদ সম্মেলন করছেন প্রধানমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একটি স্থায়ী বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। তার নিচে একটি বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। জাতিসংঘ সদর দফতরে কোনও রাজনৈতিক নেতার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ এটিই প্রথম। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বিরল সম্মান। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে আমরা আলোচনা করি, বৃক্ষরোপণ আমাদেরও লক্ষ্য। বাংলাদেশে আমরা সেটি করে যাচ্ছি। জাতিসংঘ সদর দফতর প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করতে পারা সত্যেই আমার জন্য আনন্দের।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ যে অবিচলভাবে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে, এই পুরস্কার তারই বিশ্ব স্বীকৃতি। আমি দেশের জনগণকে এই পুরস্কার উৎসর্গ করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রতিবারের মতো এবারও বাংলায় ভাষণ দিয়েছি। আমি কোভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে টিকার সর্বজনীন সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করি।’

তিনি বলেন, ‘টিকা বৈষম্য দূরীকরণে আমি কোভিড-১৯ টিকাকে বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই। আমি কোভিড-১৯ মহামারির কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর ক্ষতি কমানো, ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান, টেকসই অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন ও প্রযুক্তির অবাধ হস্তান্তরের অনুরোধ করি।’ 

সরকারপ্রধান বলেন, ‘চলমান মহামারির প্রকোপে শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা এবং টেকসই পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ডিজিটাল সরঞ্জামাদি ও সেবা, ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধার সহজলভ্যতা এবং শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখপূর্বক আমি জাতিসংঘকে অংশীদারিত্ব ও প্রয়োজনীয় সম্পদ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানাই। অভিবাসী বহনকারী দেশগুলোকে অভিবাসীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার, তাদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে আমি আবারও বিশ্বনেতৃবৃন্দকে স্মরণ করিয়ে দেই যে রোহিঙ্গা সংকটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে। রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভূমিতেই এর সমাধান। টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই কেবল এ সংকটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানাই। আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় নতুন আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে সবুজ প্রযুক্তির অবাধ হস্তান্তরের পক্ষে বক্তব্য প্রদান করি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লগ অ্যান্ড ভ্যাসের এবং জলবায়ুজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত জনগণের পুনর্বাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক কার্যকর ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানাই।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য খাতে নারীদের অবদানের কথা তুলে ধরি। তৃণমূল পর্যায়ে নারী নেতৃত্ব গঠন এবং নারী নেতৃত্ব দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহের রাজনৈতিক ও আর্থিক সুবিধাদি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করি। রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে উল্লেখ করে আমি কয়েকটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানাই।’

বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ও সহযোগিতা কামনা করি। এবারের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের মূল বিষয়গুলো বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক ছিল। বিশেষত, কোভিড-১৯ টিকার সর্বজনীন প্রাপ্যতা ও মহামারি থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত শীর্ষ সভাসমূহে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেখানে আমাদের দাবিগুলো জোরালোভাবে তুলে ধরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথাও বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করেছি, যা সব মহলে বহুল প্রশংসিত হয়েছে। অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান যেমন সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী।’

২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনি বাংলায় ভাষণ দেন।

নিউ ইয়র্কে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন। বিভিন্ন দেশের সরকার, রাষ্ট্র ও সংগঠনের প্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রী। 

আরও পড়ুন...

‘মুজিববর্ষে জাতিসংঘে বৃক্ষরোপণ দেশের জন্য বিরল সম্মান’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

 ‘শরণার্থী থাকলে কিছু লোকের বোধ হয় একটু লাভই হয়’

প্রথম প্রথম তো একটু খাওয়াতেই হয়: প্রধানমন্ত্রী

 

/এসও/পিএইচসি/আইএ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
কেবিনেটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির আলোকে প্রস্তুতি নিতে মন্ত্রীদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
সর্বশেষ খবর
আত্মরক্ষার সিদ্ধান্ত আমরা নিজেরাই নেব: নেতানিয়াহু
আত্মরক্ষার সিদ্ধান্ত আমরা নিজেরাই নেব: নেতানিয়াহু
হেলমেটের মান নির্ধারণ হবে কবে?
হেলমেটের মান নির্ধারণ হবে কবে?
ঝালকাঠিতে নিহত ১৪ জনের পরিবার পাচ্ছে ৫ লাখ টাকা করে
ঝালকাঠিতে নিহত ১৪ জনের পরিবার পাচ্ছে ৫ লাখ টাকা করে
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
সর্বাধিক পঠিত
‘ভুয়া ৮ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে’
‘ভুয়া ৮ হাজার জনকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে’
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
হজ নিয়ে শঙ্কা, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে ‍দুষছে হাব
হজ নিয়ে শঙ্কা, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে ‍দুষছে হাব
এবার নায়িকার দেশে ‘রাজকুমার’ 
এবার নায়িকার দেশে ‘রাজকুমার’ 
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি