X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা সরকারের পরিকল্পিত, অভিযোগ বিএনপির

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৩০আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৩০

দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল আহ্বান করলেও সেই কর্মসূচি পালন করেনি বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বলেন, ‘সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে আমরা মিছিল করছি না।’ এসময় তিনি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ‘বিনষ্টের’ জন্য সরকারকে দায়ী করেন। পাশাপাশি দলের  স্থায়ী কমিটির অন্যান্যরা সদস্যরাও সম্প্রীতি ‘নষ্টের’ পেছনে সরকারের ভূমিকাকে অভিযুক্ত করেন।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয়  কার্যালয়ের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলেন। এদিন সকাল ৯টার আগে থেকেই সমাবেশকে কেন্দ্র করে উপস্থিত হতে থাকে দলটির নেতাকর্মীরা। 

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, দেশে নৈরাজ্যময় পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য পরিকল্পিতভাবে সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে।

তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ যখন ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার ও স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, চাল-ডাল ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে সোচ্চার হচ্ছে- তখন পরিকল্পিতভাবে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্র করেছে। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে একটা দাঙ্গা বাঁধিয়ে দিয়েছে সরকার।’

সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা দয়া করে শান্তিতে থাকবেন। আমার শান্তিতে বিশ্বাস করি। হিন্দু, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ভাইদের ওপর হামলা আমরা অবশ্যই সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করবো।’

তার দাবি, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।  সমাবেশ থেকে সম্প্রতি ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’য় যেসব মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং যারা পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন সরকারের কাছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি জানান মির্জা ফখরুল।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতা এসেছে তারা পরিকল্পিতভাবে হিন্দু , বৌদ্ধ সম্প্রদায় এমনকি মুসলমানদের ওপর আঘাত করেছে।  তাদের লক্ষ্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার; যে হীন প্রচেষ্টার লক্ষ্যেই তারা কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৮ সাল থেকে তারা ক্ষমতায় আছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে ধ্বংস করেছে। সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে কোনও গণতান্ত্রিক স্পেস দেয় না। একটা সমাবেশ করার জায়গা দেয় না।

বিএনপির সমাবেশ

দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও লক্ষীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে যাবো না। আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে হঠিয়ে যত অন্যায় তারা করেছে, যত সম্প্রীতি নষ্ট করার জবাব জনগণ দেবে।’

মোশাররফ অভিযোগ করেন, সম্প্রতি দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার নীলনকশা সরকার করেছে।

তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জনগণ যখন নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই সম্প্রীতি নষ্ট করে দৃষ্টি অন্য দিকে প্রবাহিত করতে সরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।’

আইনশৃঙ্খলবাহিনীর উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সূর্যাস্তের আগে বিএনপির আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। যদি মুক্তি না দেন, তাহলে জনগণের সঙ্গে পুলিশের লড়াই হবে। আপনারা এরইমধ্যে অনেককে আহত করেছেন। আমরা শান্তি চাই, আপনাদের সঙ্গে সংঘাত চাই না।’ 

তিনি অভিযোগ করেন, ‘সরকার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দিচ্ছে না। তিনি ধুঁকে ধুঁকে মরছেন।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উল্লেখ করেন, এই খেলা বন্ধ করুন, খেলা বন্ধ করে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।

সকাল ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষ হয়। সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল সমাবেশ শেষ করে আপনার যার যার বাড়িতে ফিরে যাবেন শান্তিপূর্ণভাবে। তিনি সম্প্রীতি মিছিল না করার প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা মিছিল করছি না, সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে আমরা মিছিল করছি না।’

বিএনপির সংক্ষিপ্ত সমাবেশের একাংশ

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এছাড়া যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য সমমনা সংগঠনগুলোর শীর্ষনেতারা অস্থায়ী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

পরে ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকারের নেতৃত্বে সমাবেশে জমায়েত নেতাকর্মীদের একটি অংশ মিছিল বের করে। এই মিছিল শুরু হওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী অভিযোগ করেছে উভয়পক্ষ।

শতাধিক নেতাকর্মী আটকের অভিযোগ

সমাবেশের পর আজ দুপুরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ব্যর্থতার প্রতিবাদে’ বিএনপি’র পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এসময় পুলিশ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে, এখনও বিভিন্ন স্থান থেকে আটকের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

/এসটিএস/ইউএস/
সম্পর্কিত
বাংলাদেশের জনগণ কারও প্রভুত্ব স্বীকার করে না: মির্জা ফখরুল
মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে মির্জা ফখরুলপুলিশের হুইসেল-সাউন্ড গ্রেনেড শুনে পালাবে না, সেই সাহস নিয়ে দাঁড়াতে হবে
সোমবার বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ, থাকছেন মির্জা ফখরুল
সর্বশেষ খবর
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ক্যানসারে আক্রান্ত অভিনেতা রুমি, ভর্তি হাসপাতালে
ক্যানসারে আক্রান্ত অভিনেতা রুমি, ভর্তি হাসপাতালে
বুয়েটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শিক্ষার্থীদের
বুয়েটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শিক্ষার্থীদের
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা