দেশে ইতোমধ্যে যাদের করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার পর ছয় মাস পার হয়েছে, তাদেরকে বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা বেছে নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তৃতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা নিতে কোনও বাধা নেই বলে রবিবার (২০ ডিসেম্বর) জানিয়েছে অধিদফতর।
রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) সীমিত আকারে দেশে বুস্টার ডোজ কার্যক্রম উদ্বোধন হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়,দেশে এ পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বেশি দেওয়া হয়েছে। যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছে, তাদেরকেও ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তাহলে দেশে মিক্স-ম্যাচ টিকার যুগ চলে এলো কিনা প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন অনুযায়ী, তৃতীয় ডোজের টিকা হিসেবে অন্য যেকোনও টিকা দেওয়া যাবে। কিন্তু প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে একই কোম্পানির। তবে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচের ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তৃতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা নেওয়া যাবে।’
অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘যেহেতু দেশে প্রথম অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ফাইজার দেওয়াতে কোনও টেকনিক্যাল বাধা নেই। সে কারণেই বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে।’
বুস্টার ডোজের কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা যেন পর্যায়ক্রমে সারাদেশের মানুষ পায়, সে নিয়েও কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।’
‘প্রথম অবস্থায় দেশের সব জায়গায় ফাইজারের টিকা দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের ছিল না, পর্যায়ক্রমে সেটা বাড়ানো হয়েছে। দেশের ৬৪ জেলাতেই সংশ্লিষ্টরা ফাইজারের টিকা নিয়ে গেছেন। উপজেলা পর্যন্ত এই টিকা দেওয়ার জন্য এখন কাজ করা হচ্ছে।’, বলেন তিনি।
আগে যে নিয়মে টিকাদান কার্যক্রম চলেছে, এবারও সেভাবেই বুস্টার ডোজের কার্যক্রম চলবে বলেও জানান অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যারা প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন, তারা ইতোমধ্যেই আমাদের সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রার্ড এবং আপডেটেড। সুতরাং, তাদেরকেই আমরা তৃতীয় ডোজ দেবো, যাদের ছয় মাস কমপ্লিট হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি— যারা বয়স্ক এবং যারা সম্মুখসারিতে কাজ করছেন। সংক্রমণের বেশি আশঙ্কা এবং জটিলতার আশঙ্কা যাদের বেশি এবং যাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি, তাদেরকে প্রথমে বুস্টার ডোজের আওতায় নিয়ে আসবো। টিকা কার্যক্রম যখন দেশে প্রথম শুরু হয়, তখনও কিন্তু পর্যায়ক্রমে গিয়েছি, বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে সেভাবেই যাওয়া হবে। তবে প্রাথমিকভাবে ষাটোর্ধ্ব এবং ফ্রন্টলাইনারদের দেওয়া হবে।’
সারাদেশে কবে থেকে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হবে প্রজানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এ সপ্তাহের ভেতরে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে পরে শুরু করা যাবে। তাদেরকে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে কে কোথায় কখন টিকা নেবেন।’
তৃতীয় ডোজের জন্য সার্টিফিকেটও দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেজন্যই সুরক্ষা অ্যাপের জন্য অপেক্ষা করছি, যতক্ষণ না পর্যন্ত সুরক্ষা অ্যাপে আপডেট করতে না পারবো, ততক্ষণ পর্যন্ত সনদ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা যাবে না।’
বুস্টার ডোজের পাশাপাশি টিকার নিয়মিত কার্যক্রমও সমানতালে চলবে বলে জানান তিনি।