এ বিষয়ে দেশের অন্যতম বড় তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বাংলা ট্রিবিউনকে নিজের আশঙ্কা ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মূল্যায়ন
বৃহস্পতিবার গণভোটের পর গোটা ইউরোপসহ সারা বিশ্বে এর প্রভাব অনুভূত হচ্ছে এবং গোটা বিষয়টি একটি অনিশ্চিত পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। এটি অনেকটা ভূমিকম্পের মতো যার শুরু হয়েছে যুক্তরাজ্যে এবং এর ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।
যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হলেও বিভিন্ন বিষয় যেমন- ভিসা ও মুদ্রায় নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখেছিল। ব্রেক্সিটের পর থেকে বিভিন্ন দেশে শেয়ার মার্কেট পড়ে গেছে এবং বিভিন্ন শক্তিশালী মুদ্রা যেমন পাউন্ড অবমূল্যায়িত হয়েছে। স্বর্ণের দাম বেড়ে যাচ্ছে- তার মানে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মুদ্রার ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না, যা আমদানি ও রফতানির জন্য ভালো সংবাদ নয়।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, স্কটল্যান্ড এখন যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হতে চাচ্ছে যার সূদুরপ্রসারী প্রভাব পড়বে গোটা ইউরোপজুড়ে।
বাংলাদেশের ওপর প্রভাব
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রফতানি বাজার এবং গত কয়েক দিনে পাউন্ড মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে এবং সেখানে মূল্যস্ফীতি দেখার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি হলে ভোগ কমবে এবং ভোগ কমলে বাংলাদেশ থেকে রফতানি কমবে। গোটা পরিস্থিতিটাই সম্পূর্ণ অনিশ্চিত এবং সামনের দিনগুলোতে কী হবে এটি পরিষ্কার নয়।
বাংলাদেশ গত বছর প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের পণ্য যুক্তরাজ্যে রফতানি করেছে যার সিংহ ভাগ তৈরি কাপড় এবং আগামী ২০২১ সাল নাগাদ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের।
বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পায় কিন্তু এখন এ জোট থেকে বের হয়ে যাবার কারণে এ নিয়ম অকার্যকর হয়ে যাবে। এ সুবিধা যেন অব্যাহত থাকে তার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে এখন থেকেই তৎপর হতে হবে।
এছাড়া বাংলাদেশ থেকে যত ফল ও সবজি বিদেশে রফতানি হয় তার ৪০ শতাংশ যায় যুক্তরাজ্যে এবং এ বাজারকে ধরে রাখার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
যুক্তরাজ্য অনেক ক্ষেত্রে ইউরোপে বাংলাদেশের ‘কেন্দ্রবিন্দু’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এবং ইইউ থেকে বের হয়ে যাবার সিদ্ধান্তের কারণে এর একটি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। সহযোগিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের অবস্থান দ্বিতীয় এবং জাপানের পরে। ব্রেক্সিটের পরে সহযোগিতার পরিমাণ যেন না কমে তার জন্য সরকারকে সজাগ থাকতে হবে।
/এসএসজেড/এএইচ/আপ-এজে