‘সব বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন ড. মশিউর রহমানদেশের সব সমুদ্রবন্দর, নদীবন্দর ও স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন ও এসব বন্দরে নিয়োজিত মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘দ্রুততম সময়ে পণ্য খালাসের জন্য কাস্টম অধিদফতরের ব্যবস্থাপনা দক্ষতা আরও বাড়ানো দরকার। বর্তমানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের বেশি রয়েছে। দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় নীতিমালার সংস্কার করা হলে প্রবৃদ্ধির এই ধারাকে সাড়ে ৮ থেকে ৯ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব।’
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘আভ্যন্তরীণ নৌপথ: আর্থিক সম্ভাবনার সুযোগ’ বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মশিউর এমন মন্তব্য করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের নৌ মন্ত্রণালয় বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান নূর-ই-আলম চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মশিউর আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যকরভাবে চালু করতে হলে এ বিষয়ে ভারতের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। এই ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থা চালু হলে আমাদের বন্দরের পাশাপাশি সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে।’
অনুষ্ঠানে নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার পাঁনগাও ও পায়রাবন্দর স্থাপনের মাধ্যমে দেশের নৌপথের উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে পাঁনগাও বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতায় তিনটি, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুইটি, বিআইডব্লিউটিসি’র তিনটি ও বেসরকারি মালিকানায় ৫০টি জাহাজ পরিচালনার অনুমোদন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মংলা বন্দর দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হলেও বড় জাহাজের কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য এখন পর্যন্ত কোনও ক্রেন নেই।’ তিনি বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত বন্দরগুলোর সুষ্ঠু বিকাশে নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া, পণ্য খালাসে জটিলতা ও ব্যয় কমাতে গভীর সমুদ্র এলকায় ভাসমান বন্দর স্থাপনের প্রস্তাবও করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। এ ক্ষেত্রে নৌপরিবহন খাতের অবস্থান আরও নাজুক। বিশেষত চট্রগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনারের পরিবহন সড়ক ও রেল পথের ওপর বেশিমাত্রায় নির্ভরশীল।’ এ ক্ষেত্রে নৌপথের ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হলে সময় ও ব্যবসায় ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে বলেও মনে করেন তিনি।
সেমিনারে ঢাকা চেম্বারের আহ্বায়ক ও সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াসির রিজভী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এতে তিনি আভ্যন্তরীণ কার্গো চলাচলের সুযোগ বৃদ্ধি, আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং টেকসই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি জানান, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলগুলোর তুলনায় কম। তিনি ‘ন্যাশনাল মেরিটাইম অ্যান্ড পোর্ট অথরিটি’ নামে একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করেন।
ডিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি হোসেন খালেদ ছাড়াও সংগঠনটির সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, পরিচালক হোসেন এ সিকদার, ইমরান আহমেদ, খন্দকার রাশেদুল আহসান, মো. আলাউদ্দিন মালিক, মোহাম্মদ বাশীর উদ্দিন, নূহের লতিফ খান, ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী ও মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন-
পেঁয়াজের কেজি এখনও ৫০ টাকা!

ঋণ-আমানত সংক্রান্ত নির্দেশনা: ২০১৯ পর্যন্ত সময় পেলো ব্যাংক