বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন ভ্যাটমুক্ত

বাজেটে ভ্যাট প্রস্তাবপ্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল নতুন ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আইনের বাস্তবায়ন। এ আইন অনুযায়ী বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন ভ্যাটমুক্ত থাকার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। নতুন অর্থবছরের প্রথম দিন ১ জুলাই থেকে এ আইন কার্যকর করা হবে বলে বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাজেট প্রস্তাবে তিনি জানান, ভ্যাট আইনের কিছু বিষয়ে ব্যবসায়ীদের আপত্তি ছিল। এ কারণে ২০১২ সালে তৈরি করা ভ্যাট আইনে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। পরিবর্তিত ভ্যাট আইনে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বছরে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করবে সেগুলো ভ্যাট আইনের আওতার বাইরে থাকবে। তবে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ থেকে তিন কোটি টাকা পর্যন্ত তারা ৪ শতাংশ হারে টার্নওভার কর দেবে। এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতকে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

নতুন আইন অনুযায়ী ভ্যাট নিবন্ধন সীমা ৮০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩ কোটি করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের হার ছয় স্তর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো হলো ২, ২.৪, ৫, ৭.৫, ১০ ও ১৫ শতাংশ।

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) সম্পর্কে প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক আহরিত রাজস্বের মধ্যে মূসকের অবদান সবচেয়ে বেশি। বর্তমান সরকারের নানামুখী সংস্কার কর্মসূচি, সম্মানিত করদাতা ও ভোক্তাদের কর দিতে ইতিবাচক মনোভাব এবং রাজস্ব কর্মকর্তাদের আন্তরিকতায় এ খাতে রাজস্ব বেড়েছে।

এতে বলা হয়, ১৫ শতাংশ মূসকের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ৫, ৭.৫ ও ১০ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে কর-ভার কমাতে মূসক হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, পণ্যের সংবেদনশীলতা বিবেচনায় বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে ওষুধ ও পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূসকের হার আগের মতোই ২ দশমিক ৪ এবং ২ শতাংশ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ আইনটিতে পরিবর্তন এনে নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তি সনদ গ্রহণ, রিটার্ন দাখিল, কর পরিশোধ, রিফান্ড ও প্রত্যর্পণ সমন্বয় ইত্যাদি কার্যক্রম অনলাইনে সম্পাদনের সুযোগ, পণ্য সরবরাহের আগে বিদ্যমান মূল্য ঘোষণা পদ্ধতির বদলে বিনিময় বা ন্যায্য বাজারমূল্যের ভিত্তিতে কর পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে।