স্বস্তির বাজারে কমেছে বেশিরভাগ পণ্যের দাম

নিত্যপণ্যের বাজার (ছবি: ফোকাস বাংলা)রাজধানীজুড়ে করোনার আতঙ্ক বাড়লেও নিত্যপণ্যের বাজারে বেশ স্বস্তি বিরাজ করছে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই বলছেন, বাজারে তিন-চারটি পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্যের দামই কমেছে। ঈদ উপলক্ষে গত সপ্তাহে যে দু-একটি পণ্যের দাম বেড়েছিল, এ সপ্তাহে সেসব পণ্যের দাম কমে গেছে। গরুর মাংস আবারও আগের দামে ফিরেছে। কমেছে মুরগির দামও। এছাড়া, অব্যাহতভাবে কমছে পেঁয়াজের দাম। পবিত্র রমজান মাস শেষে চাহিদা কমে যাওয়ায় কমেছে ছোলার দামও। তবে বেড়েছে ডিম ও আলুর দাম।

রাজধানীর মানিকনগর এলাকার বাসিন্দা ও সরকারি কর্মকর্তা আবু হানিফ বলেন, ‘করোনার আতঙ্ক নিয়ে বাজারে এসেছিলাম। তবে খুশির খবর হলো, বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি।  মাংস, পেঁয়াজসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে।’ একই এলাকার বাসিন্দা স্বপন কুমার বলেন, ‘ডিম ও আলুর দাম কিছুটা বাড়লেও অন্য কোনও পণ্যের দাম বাড়েনি।’

এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র হিসাবেও আলু ও ডিমের দাম বেড়েছে। এছাড়া, আমদানি করা আদা ও দেশি  রসুনের দাম সামান্য বেড়েছে। তবে দেশি আদা ও  আমদানি করা রসুনের দাম কমেছে বলে টিসিবি উল্লেখ করেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে অনেকেই বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। তাছাড়া ঈদের ছুটির আমেজ এখনও কাটেনি। সব মিলিয়ে বাজারে ক্রেতা কম। যে কারণে খুচরা বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কম। পাইকারি বাজারেও জিনিসপত্রের দাম কমছে বলে জানান বিক্রেতারা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি এখন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

ঈদের আগে ঢাকার বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজির দাম ১৯০ টাকায় উঠেছিল। এখন তা কমে ১৫০ টাকায় নেমেছে। গরুর মাংসের দাম উঠেছিল ৬২০ থেকে ৬৫০ টাকায়। এখন ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায় নেমে এসেছে। এছাড়া, কক মুরগি প্রতিকেজি ২৫০ ও দেশি মুরগি প্রতিকেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  আর খাসির মাংসের  কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়।

কাঁচাবাজার (ছবি: ফোকাসবাংলা)

ছোলার কেজি নেমেছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়, যা আগের চেয়ে ৫ টাকা কম। বিক্রেতাদের দাবি, এবার রমজানেও ছোলা বিক্রি  হয়েছে কম। তবে বাজারগুলোতে বেড়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। ঈদের আগে ডিমের ডজন ছিল ৮০ টাকা। এখন বেড়ে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় উঠেছে। আর কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে আলু ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, সবজির বাজারেও স্বস্তি বিরাজ করছে। বেশিরভাগ সবজির কেজি এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকা। গোপীবাগ এলাকার সবজি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ক্রেতা কম থাকার কারণে সবজির চাহিদা কম। আর চাহিদা কম থাকায় দামও কম।’ তিনি বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে সবজির দাম বাড়তে পারে। কারণ, ৩১ মে থেকে সব অফিস আদালত খুলছে।’

শুক্রবার (২৯ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে গত সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা চড়া থাকলেও এই সপ্তাহে অধিকাংশ সবজির দামই কমেছে। শসার কেজি এখন ২০ থেকে ২৫ টাকা। প্রতিকেজি বেগুন ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। পাকা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, করলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা কেজি, ঝিঙা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন সবচেয়ে দামি সবজি  গাজর। মানভেদে গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, সব ধরনের চাল, মাছ, সয়াবিন তেল, ডালসহ অন্যান্য পণ্য আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।