১০০ টাকায়ও মিলছে না এককেজি

 

দাম বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের

করোনাকালে মানুষের আয় কমলেও জিনিসপত্রের দাম কমছে না। বাজারে বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখন প্রতিকেজি ১০০ টাকারও বেশি। নিত্যপণ্যের এই বেসামাল দামের কারণে অনেকেই সংসার চালাচ্ছেন জমানো টাকা ভেঙে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেশ ও মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার যে করুণ দশা তৈরি করেছে, তার ছাপ পড়েছে সবজিসহ মসলার বাজারেও। মানুষ আগের মতো মসলার বাজারে যাচ্ছেন না। জরুরি নিত্যপণ্য ছাড়া অন্য পণ্যের চাহিদাও কমে গেছে।

এ প্রসঙ্গে মানিকনগর এলাকায় বসবাস করা এক সংবাদকর্মী বলেন, করোনাকালে অফিস থেকে তার বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ জিনিসপত্রের দাম কমছে না। তিনি বলেন, বর্তমানে ১০০ টাকা দিয়ে কোনও পণ্যই কেনা যায় না। এককেজি গুড়া মাছ কিনতেও লাগে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

শুক্রবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আধাকেজি কাঁচা মরিচ কিনতেও এখন খরচ করতে হচ্ছে ১০০ টাকার বেশি। মাছ, মাংস ও তরি-তরকারি যা-ই কিনতে চান ১০০ টাকাতেও পাবেন না। বেশ কয়েকটি সবজির কেজি এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ১০০ টাকা কেজি দরে মসলা জাতীয় কোনও পণ্য নেই বাজারে।

১০০ টাকার নিচে এক লিটার সয়াবিন তেল মিলবে না। বড় দানার মসুর ডাল ১০০ টাকার কমে পাওয়া গেলেও ছোট দানার এককেজি মসুর ডাল কিনতে লাগছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা। মুগ ডালের দাম প্রতিকেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। ২৫০ টাকার কমে এককেজি ওজনের কোনও মাছ নেই। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২৫ টাকা। দেশি মুরগির কেজি ৪৫০ টাকা। গরুর মাংসের দাম প্রতিকেজি ৬০০ টাকা। খাসির মাংসের দাম প্রতিকেজি ৯০০ টাকা।

মসলা জাতীয় পণ্যগুলোর মধ্যে দেশি শুকনো মরিচের দাম এখন ২৩০ টাকা কেজি। আমদানি করা শুকনো মরিচের দাম ৩২০ টাকা কেজি। জিরার দাম ৩৮০ টাকা কেজি। দারুচিনির দাম প্রতিকেজি ৫০০ টাকা। লবঙ্গ প্রতিকেজি ১০০০ হাজার টাকা। এলাচের কেজি ৩ হাজার ৮০০ টাকা। ধনের কেজি ১৫০ টাকা। তেজপাতা ১৫০ টাকা কেজি। হলুদের কেজি ১৫০ টাকা। আদা ১৩০ টাকা কেজি। গুঁড়োদুধের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।

মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাঙ্গাসের কেজি ১২০ থেকে ১৭০ টাকা এবং তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, কাঁচকি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, সরপুঁটি (চায়না পুঁটি) ১৬০ থেকে ২৫০ টাকা, দেশি পুঁটি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৪০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।

সবজির মধ্যে পাকা টমেটোর কেজি ১৩০ টাকা। গাজরের কেজি ১১০ টাকা।

এ প্রসঙ্গে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। ক্রয় ক্ষমতাও কমে গেছে। অথচ মুনাফাখোরেরা এখনও জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে।’

১০০ টাকার কম দামে যেসব পণ্য:

প্রতিকেজি আলুর দাম ৩৫ টাকা, যা গত বছরের চেয়ে ৪৪ শতাংশ বেশি। ডিমের হালি ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। করলা ও বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। চিচিংগা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কচুমুখী ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।