বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল: ডিপিডিসি কার্যালয়ে বিইআরসি প্রতিনিধি দল




বিইআরসি-ডিপিডিসিঅতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ সমাধানের বিষয়ে জানতে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) প্রতিনিধিরা। সোমবার (২৭ জুলাই) বিইআরসির উপ-পরিচালক কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ডিপিডিসিতে যায়। এ সময় তারা অতিরিক্ত বিলের বিষয়ে খোঁজ নেন। মঙ্গলবারও (২৮ জুলাই) কমিশনের এই দলের ডিপিডিসিতে যাওয়ার কথা রয়েছে।

ডিপিডিসি সূত্র জানায়, বিইআরসির কর্মকর্তারা ডিপিডসিকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নেওয়ার ক্ষেত্রে কী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে খোঁজ নেন। নানা ধরনের কাগজপত্র দেখতে চান। ডিপিডিসির তরফ থেকে সেসব কাগজপত্র দেখানো হয়।

বিইআরসির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে আমরা আগেই কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়েছিলাম। তাদের কড়া ভাষায় সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। এখন তারা কী পদক্ষেপ নিয়েছে তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া আমাদের কাজ নয়। সে কাজ করবে বিদ্যুৎ বিভাগ।

বিইআরসি সূত্র জানায়, মূলত বাড়তি বিলের বিষয়ে ডিপিডিসি থেকে জানানো হয়েছে এসব বিল সমন্বয় করা হয়েছে। বিলগুলো সমন্বয় করা হয়েছে কিনা, হলে তা কতটা হয়েছে, এসব বিষয় দেখার সঙ্গে সঙ্গে কেন অতিরিক্ত বিল করে সারাদেশে হইচই সৃষ্টি করা হলো তার অনুসন্ধান চলছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

প্রতিবারই বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির দাম বৃদ্ধির সময় গ্রাহক সেবা নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন ওঠে। বিইআরসি গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিলেও কোম্পানিগুলো থেকে তা একেবারেই মানা হয় না। এবার বাড়তি বিলের অভিযোগে সারাদেশে সমালোচনা শুরু হলে বিইআরসি মাঠে নামতে উদ্যোগী হয়। বিইআরসি আইন-২০০৩ সালে প্রণয়নের পর থেকে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম। যদিও এর আগে বিইআরসি ভোক্তার অধিকার রক্ষায় গণশুনানির আয়োজন করেছে।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল দিতে সমস্যা হবে বলে চারমাসের বিদ্যুৎ বিল বিলম্ব মাসুল ছাড়া দেওয়ার আদেশ দেয় বিইআরসি। কিন্তু এই চারমাসে অতিরিক্ত বিল নেওয়ার অভিযোগ করেন হাজার হাজার গ্রাহক। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে ডিপিডিসির বিরুদ্ধে। এরই প্রেক্ষিতে ডিপিডিসি নির্বাহী পরিচালক (আইসিটি) শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করে। সেই তদন্ত কমিটি একজন নির্বাহী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করাসহ অনেককে শোকজ করে। কিন্তু শোকজ করা হয় মাঠের কর্মকর্তাদের। এসব শোকজের জবাবে সম্প্রতি ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক (আইসিটি) শহিদুল ইসলামেরই নির্দেশে তারা এই অতিরিক্ত বিল করেছে বলে জানায়। এ অবস্থায় রবিবার নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) গোলাম মোস্তফাকে প্রধান করে আরও একটি কমিটি করে ডিপিডিসি। এদিকে অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ আসতে শুরু হবার পর গত মে মাসে বিল সমন্বয় করার মৌখিক আদেশ দেয় বিইআরসি। সম্প্রতি একটি লিখিত আদেশও দেয়। কিন্তু ডিপিডিসি কমিশনের কাছে কোনও জবাবদিহি করেনি। এই অবস্থায় আজ ডিপিডিসির কার্যালয় পরিদর্শন করলো কমিশনের কর্মকর্তারা।