বিআইএফসির সাবেক এমডি ও তার স্ত্রীকে ডেকেছে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। এই  অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে  তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ মালিককেই দায়ী করা হয়েছে। এজন্যই মঙ্গলবার(৩ আগস্ট) তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে মাহমুদ মালিকের  স্ত্রী ও বিআইএফসির সাবেক পরিচালক হাফসা আলমকেও ডেকেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত কমিটি। সুকুজা ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তৎকালীন দায়িত্বে ছিলেন হাফসা আলম।

জানা গেছে, হাফসা আলম ইতোমধ্যে গোপনে বিদেশে চলে গিয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মাহমুদ মালিকও যে কোনও সময়ে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করছেন।

জানা গেছে, মাহমুদ মালিক বিআইএফসিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপরই তিনি ইডকল নামের রাষ্ট্রায়ত্ত আরেকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। গত ৩১ জুলাই তার মেয়াদ শেষ হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক তার মেয়াদ আর বৃদ্ধি করেনি।

জানা গেছে, তদন্তের জন্য ইতোপূর্বেও মাহমুদ মালিক ও তার স্ত্রী হাফসা আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। সেই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ডাকা হয়েছে। কিন্তু স্ত্রী হাফসা আলম দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

সুকুজা ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন হাফসা আলম। বিআইএফসির শেয়ার হোল্ডার হচ্ছে সুকুজা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল।

হাফসা আলমের স্বামী মাহমুদ মালিক বিআইএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালীন সময়ে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে সহযোগিতা করেন। এজন্য ইতোপূর্বেও এক দফায় হাফসা আলমকে ডেকেছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত কমিটি।

জানা গেছে, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠা বিআইএফসি-তে সংঘটিত আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশনা দেন আদালত। এরপরই গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) আর্থিক অনিয়মের ঘটনায় জড়িতদের দায়দায়িত্ব নির্ধারণে তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কমিটির নাম দেওয়া হয় ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি’। আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সবার দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করার দায়িত্ব পায় কমিটি।

কমিটির প্রধান করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-৩ এ কে এম সাজেদুর রহমান খানকে। অন্য সদস্যরা হলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম ফজলুর রহমান, দুই মহাব্যবস্থাপক কবির আহমেদ ও নুরুল আমিন। সদস্য-সচিব করা হয়েছে উপ-মহাব্যবস্থাপক সারোয়ার হোসেনকে।

বর্তমানে দেশে ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১০টির আর্থিক অবস্থাই বেশ নাজুক। এরমধ্যে বিআইএফসি অন্যতম।