‘এসি রুমে বসে বাজার সামলানো যায়?’

চাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও মসলাসহ সকল পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক। তবু বেড়েছে দাম। কখনও আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা, কখনও বৃষ্টি, আবার কখনও লকডাউনের দোহাই দিয়ে বেড়েছে দাম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে শোকের মাস আগস্টেই। যা সরকারের জন্য বিব্রতকর।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেলো, প্রতিকেজি আটার দাম এখন ৪০ টাকা। চালের কেজি ৭৬ থেকে ৮০ টাকা। বেড়েছে চিনির দামও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি ৮০ টাকা হয়েছে। সয়াবিনসহ ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে আগেই। বাদ যায়নি মসুর ডাল, ডিম, মাছ ও মাংস।

রাজধানীর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবচেয়ে নিম্নমানের সেদ্ধ চালের কেজি এখন ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। উন্নতমানের সেদ্ধ চাল ৮০-৮৫ টাকা। আমদানিসহ নানা উদ্যোগ, কারসাজি করা ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল, জরুরি আইনে মামলাসহ যাবতীয় হুঁশিয়ারিতেও কমেনি চালের দাম।  

এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, ‘বাজারে যাতে কৃত্রিম সংকট না হয় সে জন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যায়ভাবে মজুত করলে বা দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অথচ আমদানি করে কিংবা বাম্পার ফলন ফলিয়েও কমানো যাচ্ছে না দাম।

২৫ আগস্ট বাণিজ্য সচিব ঢাকায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। এটিই নাকি বছরের প্রথম বৈঠক। তাই বড় কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সচিবালয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে হয়েছিল ওই সভা। 

সভায় বাণিজ্য সচিব জানিয়েছেন, বাজারে চালের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকার আমদানি শুরু করেছে। শুল্কও কমানো হয়েছে। আমদানিকৃত ভোজ্যতেল ও চিনির যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। জেলা-উপজেলাসহ সারা দেশেই এখন বাজারে মনিটরিং করবে সরকার।

আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, ভোজ্যতেলের দাম আগে যা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটাই থাকবে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে তা পরে বিবেচনা করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাওরানবাজারের ব্যবসায়ী আবু তাহের জানিয়েছেন, ‘এসি রুমে বসে বাজার সামলানো যায়? বাজার চলে আপনগতিতে। ব্যবসায়ীরা মুনাফার জন্য ব্যবসা করে, এটি মাথায় রাখতে হবে। লোকসান দিতে কেউ ব্যবসা করে না। পাইকারি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে খুচরা বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় ।’

শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী কাওসার আজম জানিয়েছেন, ‘বড় বড় ওষুধ কোম্পানিও এখন আটা, চাল-ডালের ব্যবসা শুরু করেছে। প্যাকেটের গায়ে কোম্পানির একটা সিল বসিয়ে বাজারে ছাড়লেই দাম বেড়ে যায়। তাদের কাছে কেউ জানতে চেয়েছে কেন এক কেজি চালের দাম ৮৬ টাকা?’