ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান

অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে দেশের ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও উদ্যোক্তারা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারাই (এসএমই) অর্থনীতির মূল ভিত্তি। কিন্তু ব্যাংকঋণ পাওয়া ও বিনিয়োগে পিছিয়ে থাকাসহ বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ছোট ছোট ব্যবসা ধরার কারণে ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন ছোট ও গ্রামীণ শিল্পোদ্যোক্তারা। অনেকে ব্যবসা থেকে সরেও দাঁড়াচ্ছেন। এসব কারণে সরকারের নীতিসহায়তা চাইছেন তারা।

বুধবার (১৫ মে) এফবিসিসিআই’র সিএমএসএমই অ্যান্ড রুরাল ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এসব কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, নীতিসহায়তা দিয়ে কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প বা সিএমএসএমই এবং গ্রামীণ শিল্পোদ্যোক্তাদের উন্নয়ন করা গেলে অর্থনীতিতে বহুগুণ বেশি অবদান রাখতে পারবে তারা। 

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প হচ্ছে অর্থনীতির মূল ভিত্তি। এসএমই ঠিক থাকলে দেশের অর্থনীতি ঠিক থাকবে। কোরিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশ এসএমইকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদেরও অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের গুরুত্ব দিতে হবে। এই খাতের নিরাপত্তা দিতে হবে। এ সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান নীতিগুলো বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। 

এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, অর্থনীতিতে প্রায় ৮৫ ভাগ অবদান রাখছে দেশের বেসরকারি খাত। নীতিসহায়তার জন্যই এ অবদান সম্ভব হয়েছে। তবে বেসরকারি খাতকে আরও এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিবছর প্রায় ২৭ লাখ বেকার ছেলেমেয়ে কর্মসংস্থানের জন্য শ্রমবাজারে আসে। এদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে, ছোট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যাতে তাদের ব্যবসা ঠিকভাবে করতে পারে সেক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নীতিসহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ খান আহমেদ শুভ এমপি বলেন, কোভিডকালে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রণোদনা দিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা যাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে পারে সেজন্য ব্যাংকঋণ থেকে শুরু করে সবদিকে খেয়াল রেখেছেন। এ কমিটির মাধ্যমে পাওয়া সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হলে এসএমই খাতের উন্নয়ন হবে। এ খাতকে মাইলফলক হিসেবে নিয়ে যেতে সবার সহযোগিতা দরকার।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান বহুগুণ বেশি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এজন্য এসএমই খাতের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। এসএমই খাতের উন্নয়নে শিগগিরই একটি সেমিনার আয়োজন করা হবে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব খাতেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বৈশ্বিক সংকটে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখতে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন।

সভায় আরও কথা বলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক রেজাউল করিম রেজনু সিআইপি, হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ সিআইপি, আজিজুল হক, নিয়াজ আলী চিশতী, এফবিসিসিআইর মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।

বক্তারা বলেন, কমপ্লায়েন্স, অর্থায়ন ও অনেক সময় লিগ্যাল ডকুমেন্টস না থাকায় পিছিয়ে থাকছে এসএমই খাত। কিন্তু বড় ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠান চাইলে এসএমইদের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ-এর মাধ্যমে সংযুক্ত করে ব্যবসা করতে পারে। এজন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন।