বাজেটের আগেই শেয়ার বাজার চাঙা, আসছে আরও সুখবর

দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বৃহস্পতিবার (২৭ মে) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০১ পয়েন্ট। লেনদেন শেষে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৯৮৬ পয়েন্টে, যা ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির পরে এর সর্বোচ্চ অবস্থান। ওই দিন সূচকটির অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৫০ পয়েন্টে। শুধু তা-ই নয়, গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই সূচকের উত্থান হয়েছে। আর বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এদিকে শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, বাজেট ঘোষণার পর বাজারের আরও উত্থান হবে। কারণ, বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য অন্তত চারটি সুসংবাদ আসছে। এরমধ্যে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর কমার পাশাপাশি চলতি বছরের মতোই মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে আগামী অর্থবছরেও কালো টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুবিধা থাকবে। থাকবে ব্রোকার হাউজের লেনদেনের ওপর আরোপিত এআইটি কর কমানোর সুবিধা এবং পুঁজিবাজারে বন্ড মার্কেটকে বিকশিত করতে বিশেষ ছাড়।

জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নন-লিস্টেড অর্থাৎ পুঁজিবাজারে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর সাড়ে ৩২ শতাংশ থেকে আড়াই শতাংশ কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হচ্ছে। আর তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২২ শতাংশ করা হচ্ছে।

তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে ২৬ মে (বুধবার) সরকারি ছুটির কারণে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে চার কার্যদিবস। এরমধ্যে তিন কার্যদিবস সূচকের উত্থান হয়েছে। আর এক কার্যদিবস দরপতন হয়েছে। উত্থানের কারণে সূচক ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। শেয়ারের দাম বাড়ায় বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এর আগের সপ্তাহেও আরও ২ হাজার কোটি টাকার পুঁজি ফিরেছে বিনিয়োগকারীদের। এই নিয়ে ঈদ পরবর্তী দুই সপ্তাহে ডিএসইর বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার পুঁজি ফিরলো। অবশ্য পুঁজি ফিরলেও আগের সপ্তাহের তুলনায় লেনদেন কমেছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, ১২০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৮০০ বিনিয়োগকারী এখন বিমা এবং ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন। ফলে বিদায়ী সপ্তাহে বিমা কোম্পানির পর ব্যাংকের শেয়ার কেনার ধুম পড়ে। ফলে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারই ডিএসইর সূচক বেড়েছে ১০১ পয়েন্ট। তাতে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও বেড়েছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে চার দিনে মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৬৮৩ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার ১১৫ টাকা। আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৮ হাজার ৪২৪ কোটি ৪৬ লাখ ২৩ হাজার ৬৪০ টাকা। গত সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন কমেছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বা ৮ শতাংশ।

বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৭টির, কমেছে ৯২টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৩টির। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৭২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ১২ দশমিক ২০ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০-এর সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়েছে। বেশিরভাগ শেয়ারের দাম ও প্রধান সূচক বাড়ায় ডিএসইতে গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন ১০ হাজার ৪৫১ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার ২০৫ টাকা বেড়ে ৫ লাখ ২ হাজার ৭৪৩ কোটি ৫০ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে। 

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৪৪৪ কোটি ১১ হাজার ৯৪৪ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪৭৩ কোটি ৮৬ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৭ টাকা। অর্থাৎ আগের সপ্তাহের চেয়ে গত সপ্তাহে লেনদেন কম হয়েছে।