গার্মেন্টসের অর্ডার বাতিলের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার

রুবানা হক
বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতি অবনতির সঙ্গে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ছে। করোনার কারণে বিদেশি ক্রেতারা এরই মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল করেছেন। তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র তথ্য বলছে, শুধু চলতি মার্চ মাসই নয়, আগামী এপ্রিল, মে ও জুন মাসের অর্ডারও বাতিল করছেন ক্রেতারা।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, সোমবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত করোনার কারণে ক্রেতারা ১.৯৮ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল করেছেন। তিনি জানান, আগামী এপ্রিল, মে ও জুন মাসের অর্ডারও বাতিল করছেন ক্রেতারা। রুবানা হক বলেন, তবে পরিস্থিতি যাই হোক, পোশাক শ্রমিকেরা সময় মতো মজুরি পাবেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, সরকার পোশাক শিল্পের পাশে আছে। তিনি জানান, গত চার দিনে প্রায় দুইশ’ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত হয়েছে। এতে অন্তত ১২ লাখ পোশাক শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে বিজিএমইএ নেতারা বলছেন, আর্থিক সংকটের কারণে কিছু দিনের মধ্যে অন্তত এক হাজার গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। পরিস্থিতি খারাপ হলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ প্রসঙ্গটি তুলে রুবানা হক বলেন, বিজিএমইএ কাউকে বন্ধ করতে বলবে না। আবার চালু রাখতেও বলবে না। গার্মেন্ট মালিক নিজেরা নিজেদের কারাখানা চালু বা বন্ধ রাখবে।

বিজিএমইএ’র তথ্য বলছে, এর আগে আর্থিক সংকটের কারণে গত ১৪ মাসে (২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি) বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত ১০৬টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া গত বছরের তুলনায় এই বছরের ১৮ মার্চ তৈরি পোশাক রফতানি কমেছে ৪১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এই বছরের ১৯ মার্চ কমেছে ১২ দশমিক ০২ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এই বছরের ২০ মার্চ রফতানি কমেছে ৪৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।

জানা গেছে, এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১৩৬টি ব্র্যান্ড তাদের অর্ডার বাতিল বা স্থগিত করেছে। করোনাভাইরাস ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ার পর তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে গেছে। বিজিএমইএ’র তথ্য বলছে, প্রায় সাড়ে চার হাজার তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন অন্তত ৫০ লাখ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী শ্রমিক।
এদিকে তৈরি পোশাক কারাখানা বন্ধ করার বিষয়ে মালিকরাই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, গার্মেন্ট মালিকরা স্যানিটাইজার, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। গ্লাভস ও মাস্ক ব্যবহার করেই কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। মালিকরা সিদ্ধান্ত নেবেন তারা কী করবেন।