এফডিআই আকর্ষণে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান

1এফডিআই আকর্ষণে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগের গতিপ্রবাহে কোভিড-১৯ এর প্রভাব : সমস্যা ও উত্তরণ’ শীর্ষক ওয়েবিনার শনিবার (২২ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হয়। ওয়েবিনারে এই আহ্বান জানান বক্তারা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। এছাড়াও ওয়েবিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগদান করেন বাংলাদেশস্থ জাপান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি।

স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের ৯.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যদিও আমরা সে লক্ষ্য অর্জন করতে পারিনি। তিনি জানান, গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম খাতে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে, যেখানে মার্কিন বিনিয়োগের পরিমাণ ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বলেন, ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০২০-এর তথ্য মতে, কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালে বৈশ্বিক বিনিয়োগ ৪০% কমে, ১.৫৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের এসে দাঁড়াতে পারে, যার ফলে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে কোভিড পরবর্তী সময়ে বৈদেশিক বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যেতে পারে। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সময়োপযোগী সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও সংস্কার, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের আরও শক্তিশালীকরণের ওপর জোরারোপ করেন
ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ-এর চেয়ারম্যান ড. এম. মাশরুর রিয়াজ। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, আঙ্কাটার্ড-এর তথ্য মতে, ২০২০ সালে বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রায় ৪০% হ্রাস এবং ২০২১ সালে হ্রাস পাওয়ার হার আরও ৫ থেকে ১০% বাড়ার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে এশিয়া অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশসমূহে বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রায় ৪৫% কমে যেতে পারে। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে নতুন পণ্য উৎপাদন, উদ্ভাবন, অবকাঠামো, বাজার ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা বাড়ানো ওপর আরও বেশি হারে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এমপি বলেন, হ্রাসকৃত করের হার বিনিয়োগকারীদের নতুন বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করে, তবে আমাদের দেশে কর-জিডিপি’র আনুপাতিক হার এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। এক্ষেত্রে আমাদের বিদ্যমান করদাতাদের ওপর করের বোঝা না বাড়িয়ে নতুন করদাতা খুঁজতে হবে। তিনি বলেন, সরকার নীতি সংস্কারের উপর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, এবং নীতি সংস্কারের এ উদ্যোগ দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, এসইজেড অঞ্চলে খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতে বিনিয়োগ করলে উদ্যোক্তারা ২০% ক্যাশ ইনশিয়েটিভ পাবে। তিনি জানান, মোটরসাইকেল নিবন্ধন ফি কমে ১০%-এর নীচে আনা হবে। তিনি বেজা, বিডা এবং হাইটেক পার্ক প্রভৃতি কর্তৃপক্ষের আরও ক্ষমতায়নের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশস্থ জাপান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি বলেন, জাপানী বিনিয়োগকারীর বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী এবং ২০১৯ সালে এশিয়াতে জাপানি বিনিয়োগ ছিল ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশে ০.০৯% জাপানিজ বিনিয়োগ এসেছে। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর ভিত্তিক অর্থনীতি এবং এশিয়ায় অঞ্চলে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনে জাপানের পক্ষ হতে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।