রিসাইকেলড ফাইবারে শুল্ক কর প্রত্যাহার চায় বিটিএমএ

রিসাইকেলড ফাইবার আমদানিতে শুল্ক কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ)। একইসঙ্গে সংগঠনটি বস্ত্র উৎপাদনে জড়িত শিল্প প্রতিষ্ঠানের আয়কর হার ২০৩০ সাল পর্যন্ত ১৫ শতাংশ বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সংগঠনটি এ প্রস্তাব দেয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এ সময় এনবিআর সদস্য (কাস্টমস নীতি) মো. মাসুদ সাদিক, সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানা ও সদস্য (আয়কর নীতি) সামস উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় বিটিএমইএ এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
বিটিএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘বিশ্ব বাজারে ম্যান মেড ফাইবার দিয়ে তৈরি পোশাকের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। একইসঙ্গে রিসাইকেলড ফাইবারের ব্যবহার বাড়ছে। রিসাইকেলড ফাইবার দিয়ে তৈরি সুতায় পোশাক অত্যন্ত আরামদায়ক, ফ্যাশনেবল, বৈচিত্র্যময় ও তুলনামূলক সাশ্রয়ী। ফলে দেশি-বিদেশি ক্রেতার কাছে এ ধরনের পোশাক সমাদৃত ও ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবিষ্যতে এর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রিসাইকেলড ফাইবার আমদানিতে শুল্ক কর মুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করছি।’

তিনি বলেন, ‘বস্ত্র উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত শিল্প প্রতিষ্ঠানের আয়কর হার আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত ১৫ শতাংশ বহার রাখার প্রস্তাব করছি। এছাড়া কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ের বিদ্যমান অগ্রিম কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার দাবি জানাই।’
তিনি তার প্রস্তাবনায় বলেন, ‘সব ধরনের সুতার ওপর স্থানীয় বাজারে বিক্রয় পর্যায়ে প্রতি কেজিতে ৩ টাকা মূল্য সংযোজন কর ধার্য করা দরকার। বিদ্যমান নিয়মানুযায়ী, প্রতি কেজিতে ৬ টাকা কর দিতে হয়। এছাড়া টেক্সটাইল মিলে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ভিন্ন ভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারার্সের তৈরি। যদি একই ম্যানুফ্যাকচারার্সের কাছ থেকে মেশিনারিজ যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়, তাহলে ক্যাপিটাল মেশিনারিজের মতো এক শতাংশ শুল্ক দিয়ে আমদানির সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করছি।’


বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘কোনও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোট জনবলের ন্যূনতম ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ করলে প্রদেয় করের ৫ শতাংশ রেয়াত দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এত কর্ম উপযোগী প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নিয়োগ দেওয়ার জন্য পাওয়া যায় না। তাই কোনও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোট জনবলের ন্যূনতম ১ শতাংশ, ২ শতাংশ, ৩ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ করলে ওই করদাতাকে প্রদেয় করের যথাক্রমে ২, ৩ ও ৪ শতাংশ কর রেয়াতের সুবিধা দেওয়ার দাবি জানাই।’

বিকেএমইএ প্রস্তাবনায় শতভাগ রফতানিমুখী পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে শূন্য ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের রফতানি এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবপণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।