উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ দিতে চায় বিজিএমইএ

চলমান সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২১-২২ অর্থবছরের মতো এবারও উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। তাই আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত তা কার্যকর ও নগদ সহায়তার ওপর আরোপ করা ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

শুক্রবার (২ জুন) বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আজিজ গ্রুপ সেন্টারের অডিটরিয়ামে বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

তিনি বলেন, আমরা নগদ সহায়তার ওপর আরোপ করা ১০ শতাংশ কর প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছিলাম, যেহেতু নগদ সহায়তা কোনও ব্যবসায়িক আয় নয়, তাই নগদ সহায়তার অর্থকে করের আওতার বাইরে রাখাই যুক্তিসংগত। আমরা মনে করি, এই সংকটময় সময়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, বর্তমানের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এবারের বাজেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ। এটি বর্তমান সরকারের চলমান তৃতীয় মেয়াদের সর্বশেষ বাজেটও বটে। এটি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় বাজেট। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট এটি। এর মধ্য দিয়ে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে স্মার্ট যুগে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

ফারুক হাসান বলেন, এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, উচ্চতর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা ও রাজস্ব বাড়ানো, যা আমাদের বাজেটের ইতিবাচক দিক। বর্তমান সংকটকালীন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে যখন কি না, সাম্প্রতিক রফতানি আয়, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের নিম্নমুখী ধারা স্পষ্ট দৃশ্যমান, তখন সরকার আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ঘোষণা দিয়েছে, যা এই কঠিন সময়ে জাতির মনে আশার সঞ্চার করেছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩টি পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূসক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে জানিয়ে সভাপতি বলেন, সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা মনে করি, এর ফলে জ্বালানি ও বিদ্যুতের দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেই সঙ্গে আমরা দাবি করবো যেন আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে আনা হয়। পাশাপাশি এলএনজি এবং এলপিজির আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি করা হলে একদিকে আমাদের শিল্পে উৎপাদন খরচ কমবে, আমাদের প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়বে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, সেটি অর্জন সহজ হবে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের জায়গাটিতে আমরা এখনও পিছিয়ে আছি। আমাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সব ধরনের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে এবং এই অসাধু কর্মকাণ্ডের পেছনে লাইনম্যান, মিটার রিডার ও ভোক্তা, যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।