আলুর কেজি ৪৫, পেঁয়াজ ৯০

বেঁধে দিয়েও গেলো না বাঁধা

দুই সপ্তাহেও সরকার নির্ধারিত দাম বাজারে কার্যকর হয়নি। বাজারে আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়, আর পেঁয়াজ ৯০ টাকায়। আজ বাজার করতে আসা মানুষের সান্ত্বনা হচ্ছে, গত সপ্তাহের চেয়ে আজ আলু বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা কম দামে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫০ টাকা কেজিতে। তবে পেঁয়াজের বাজারে সেই সান্ত্বনা নেই। গত সপ্তাহে মতো আজও অপরিবর্তিত ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। 

গত ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের দাম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তিন কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত জানান। সে অনুযায়ী প্রতিকেজি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। আলু কেজিতে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা এবং কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৬-২৭ টাকা। ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতি পিস ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরও দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে ডিম আমদানির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এরমধ্যে ১০ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে

আজ দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে নির্ধারিত দাম এখনও বাজারে কার্যকর হয়নি। কিন্তু দাম নির্ধারণের পর থেকেই বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালাচ্ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। তবু আলু-পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। দাম বেঁধে দিয়েও ব্যবসায়ীদের সেই নির্দেশ মানার ক্ষেত্রে বাঁধা যায়নি।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচা বাজারে সরেজমিন দেখা যায় বাজারের এই চিত্র।

আজ বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা বেশিতে। গত সপ্তাহে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৬০ টাকা। এই বাজারে আলু ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা রুবেল বলেন, আমার আলু কেনা পড়ছে ৪০ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, ক্রস পেঁয়াজ ৭৮ টাকা, ভারতীয় ৬৫ টাকায় কিনেছি। আমি কমে কীভাবে বিক্রি করবো?

এসময় এই বিক্রেতা নিজের গতকালের কেনা পণ্যের ক্রয় রসিদও দেখান।

আলু-পেঁয়াজ কিনছিলেন রাশেদুল হক। সরকার নির্ধারিত দামে কিনতে পারছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্ধারণ জিনিসটা আবার কী? এটা শুধু শুনেছিই যে সরকার দাম নির্ধারণ করেছে, কিনতে গিয়ে তার কিছু তো চোখে পড়লো না।

ডিম পাওয়া যাচ্ছে আগের চেয়ে কম দামে

আলু-পেঁয়াজ নির্ধারিত দামে বিক্রি না করলেও ডিম বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত দামের থেকে কমেই। আজ প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা, সাদা ডিম ডজনপ্রতি ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।

এছাড়া আজ দেশি আদা ২৬০-২৮০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০, দেশি রসুন ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী

আজকের বাজারে সব ধরনের সবজির দাম রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী। লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১০০-১২০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, পটল ৬০-৭০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা,  ধুন্দল ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, শিম ১৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৮০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ৭০ টাকা ও চাল কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, আজকে প্রায় সব সবজির দামই কিছুটা বেশি আছে।

মাছের বাজারের অবস্থা আগের মতোই

এছাড়া আজ ইলিশ মাছ ৮৫০-২২০০ টাকা, রুই মাছ ৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৫৫০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৮০০-১০০০ টাকা, কাঁচকি  ৫০০ টাকা,  টেংরা ৭০০ টাকা, কৈ ৪০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা, শিং ৪০০-৫৫০ টাকা, বেলে ৮০০-১০০০ টাকা, বোয়াল ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮৫, কক মুরগি ২৯৫, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানগুলোয় সব পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই

আজকের বাজারে মুদি পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। মসুর ডাল ১৩০, মোটা মসুর ১০৫ টাকা, মুগ ডাল ১৩০, খেসারি ডাল ৮০, বুটের ডাল ৯০, ছোলা ৭৫, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫, চিনি ১৩৫, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ছবি: প্রতিবেদক।

আরও পড়ুন- সরকার নির্ধারিত দামের ডিম আকারে ছোট