১০ মাসের মধ্যে এপ্রিলে রফতানি আয় সর্বনিম্ন, ধাক্কা গার্মেন্ট খাতেও

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশের সামগ্রিক রফতানি খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি থাকলেও এপ্রিল মাসে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, এপ্রিল মাসে দেশের পণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার, যা চলতি অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ০ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অথচ মার্চ মাসে রফতানি আয় ছিল ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার—অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে রফতানি কমেছে প্রায় ১ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্লেষকদের মতে, এবারের ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটি ও শিল্প খাতে চলমান গ্যাস সংকট এই ধসের মূল কারণ। তৈরি পোশাকসহ বেশিরভাগ কারখানা এক থেকে দেড় সপ্তাহ বন্ধ থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে রফতানিতে।

পোশাক খাতেও ধীর গতি

দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাকে (আরএমজি) গত ১০ মাসে মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ। তবে শুধু এপ্রিল মাসে এই খাতের আয় ছিল ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ০ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি।

বিভাগ অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে নিট পোশাক রফতানিতে ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থাকলেও, ওভেন পোশাক রফতানি কমেছে ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

তবে জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে নিট পোশাক রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ (১৭ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার) এবং ওভেন পোশাক বেড়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ (১৫ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার)।

সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা

বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘গোটা অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির গতি ইতিবাচক থাকলেও এপ্রিলের পারফরম্যান্স আমাদের জন্য সতর্ক সংকেত। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে উৎপাদন অবকাঠামো ও জ্বালানি সরবরাহে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।’

অর্থনীতিবিদদের মতে, সরবরাহ চেইনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং উৎসবকালীন উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় বিশেষ কৌশল গ্রহণ সময়োপযোগী হবে।