সোনাগাজীতে ২০০ মেগাওয়াট  সৌরবিদ্যুৎ-কেন্দ্র স্থাপনে চুক্তি সই

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) রবিবার (২৯ জুন) যৌথভাবে একটি চুক্তি সই করেছে। এর মাধ্যমে দেশের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিক সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথ উন্মুক্ত হলো।

চুক্তির আওতায় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রায় ৪০০ একর জমিতে ১০০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্রাউন্ড-মাউন্টেড সৌর ফটোভোল্টেইক এবং ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম (ইএসএস) স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এডিবি  ‘ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস অ্যাগ্রিমেন্টের (টিএএসএ) আওতায় কারিগরি সহায়তা দেবে।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি), পিপিপি কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

গ্রিন জোন গঠনের পথে অগ্রগতি

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘এই প্রকল্পটি শুধু বেজার জন্য নয়, বরং দেশের জন্য একটি মাইলফলক। এটি পিপিপি কাঠামোয় বাস্তবায়িত দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প— যা আমাদের ‘গ্রিন ইকোনমিক জোন’ গঠনের লক্ষ্যকে এগিয়ে নেবে।” তিনি আরও জানান, প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে এডিবি’র সহায়তায় প্রয়োজনীয় সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘‘শিল্পায়নের সঙ্গে পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করে ‘জিরো নেট কার্বন এমিশন’ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য বেজা সচেষ্ট রয়েছে।”

এডিবির আশাবাদ

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, “এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে। প্রথমবারের মতো এতে ব্যাটারি স্টোরেজ অন্তর্ভুক্ত থাকছে, যা ক্লিন এনার্জি সরবরাহে সহায়ক হবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে।”

নীতিগত অনুমোদন ও বাস্তবায়ন কাঠামো

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে পিপিপি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রকল্প স্ক্রিনিং সম্পন্ন হয়েছে এবং গত ১৮ মার্চ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির (এসিইএ) সভায় নীতিগত অনুমোদন লাভ করেছে।

এডিবি প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই, আর্থিক মডেলিং, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন, আইনগত বিশ্লেষণ এবং টেন্ডার সহায়তা প্রদান করবে। বিদ্যুতের ট্যারিফ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

টেকসই বিদ্যুৎ ও টেকসই ভবিষ্যৎ

এই প্রকল্পের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে নবায়নযোগ্য শক্তির অংশ বাড়বে এবং নিরবচ্ছিন্ন শিল্পবিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সহায়তা করবে। সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি-২০২৫ বাস্তবায়নে এটি হবে একটি কার্যকর উদ্যোগ।