বৈদেশিক মুদ্রায় সীমিত লেনদেন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য লাইসেন্স প্রাপ্তি, কার্যক্রম পরিচালনা এবং নবায়ন সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার (২ জুলাই) জারি করা এক সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ এ নির্দেশনা জারি করেছে।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, সীমিত মানিচেঞ্জার হিসেবে অনুমোদন পেতে ব্যাংকের শাখা বা বুথের পাশাপাশি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ধারিত কাগজপত্রসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে। ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এডি (অ্যাপ্রুভড ডিলার) ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদন জমা দিতে হবে।
যা থাকছে লাইসেন্স আবেদন প্রক্রিয়ায়
ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে সংশ্লিষ্ট শাখা বা বুথের অনুমোদন কপি, বৈদেশিক লেনদেনে প্রশিক্ষিত জনবল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত তথ্যাদি। অপরদিকে, হোটেল, গিফট শপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজন হবে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন ও বিআইএন সনদ, ব্যবসা পরিচালনার অভিজ্ঞতা ও অবকাঠামোগত সক্ষমতা সংক্রান্ত দলিল। প্রাথমিক অনাপত্তি পাওয়ার পর ৫০ হাজার টাকার পে-অর্ডার/ড্রাফট জমা দিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুকূলে।
কার্যপরিধি ও সীমাবদ্ধতা
লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংক শাখা বা বুথ বিদেশগামী যাত্রীদের ডলার এন্ডোর্সমেন্ট, এনক্যাশমেন্ট ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করতে পারবে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু বিদেশি পাসপোর্টধারীদের কাছ থেকে নগদ বৈদেশিক মুদ্রা গ্রহণ করতে পারবে এবং তা পরবর্তী কর্মদিবসে এডি ব্যাংকের মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তর করতে হবে। তবে, লেনদেনের সুবিধার্থে সর্বোচ্চ ১ হাজার ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা হাতে রাখতে পারবে।
নবায়ন প্রক্রিয়া
ব্যাংকের ক্ষেত্রে লাইসেন্স নবায়নের প্রয়োজন না হলেও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য লাইসেন্সের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে দুই বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস আগেই নবায়নের আবেদন করতে হবে। এর সঙ্গে জমা দিতে হবে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট পরিশোধের সনদ, লেনদেনের বিবরণী ও নবায়ন ফি বাবদ ১০ হাজার টাকা ইএফটির মাধ্যমে জমার প্রমাণ।
পরিদর্শন ও বাতিলের ক্ষমতা
বাংলাদেশ ব্যাংক লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বা আবেদনকারীকে সরেজমিনে পরিদর্শনের অধিকার সংরক্ষণ করেছে। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা, নির্দেশনা অমান্য বা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কোনও কারণ দর্শানো ছাড়াই লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতাও বাংলাদেশ ব্যাংক রাখবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে ব্যবস্থা
সার্কুলারে বলা হয়, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশীয় প্রচলিত আইন এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। পাশাপাশি, গ্রাহকদের অবগতির জন্য বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় নোটিশ বোর্ড স্থাপন করতে হবে, যেখানে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার উল্লেখ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, সীমিত মানিচেঞ্জার লাইসেন্স প্রদানের সর্বশেষ সিদ্ধান্তও তারা নিজেরাই গ্রহণ করবে।