বিবিয়ানায় গ্যাস উৎপাদন কমায় উদ্বেগ

বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন কমে আসায় নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। গত এক বছরে ক্ষেত্রটির উৎপাদন দৈনিক প্রায় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট কমে গেছে। সরকার যেখানে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়ে সংকট মোকাবিলা করতে চাইছে, সেখানে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের এই উৎপাদন ঘাটতি চোখে লেগেছে জ্বালানি বিভাগের।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, আগামী ৪ জুলাই বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের দায়িত্বে থাকা মার্কিন কোম্পানি শেভরনের সঙ্গে জ্বালানি বিভাগ বৈঠক করবে। ওই বৈঠকে শেভরনের হাতে থাকা তিন গ্যাসক্ষেত্রের ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হবে। জ্বালানি বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পেট্রোবাংলা এবং শেভরনের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। 

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, গত বছর ১ জুন বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন ছিল ১৩৫১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ঘনফুট। চলতি বছর ১ জুন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১২৫৭ মিলিয়ন ঘনফুটে। অর্থাৎ ৯৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন কমে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) শেভরন বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে ১২২৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তুলছে। গত বছর এই দিনে গ্যাস তুলেছিল ১৩২৭ মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ আজ থেকে এক বছর আগে ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বেশি তুলেছিল।

দেশে মোট যে গ্যাস উৎপাদন হয় তার সিংহভাগ আসে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে। আজ দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে মোট ২৩৭১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে। এরমধ্যে এককভাবে বিবিয়ানা থেকে সরবরাহ করা গ্যাসের পরিমাণ প্রায় অর্ধেক। আজ বিবিয়ানা থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে ১২২৯ মিলিয়ন ঘনফুট।

সঙ্গত কারণে বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের উৎপাদন ঠিক রাখার বিষয়ে জ্বালানি বিভাগের বিশেষ নজর থাকে। কিন্তু বিবিয়ানার গ্যাস অফুরন্ত নয় উল্লেখ করে সতর্ক হওয়ার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছিল। যদিও তা সংশ্লিষ্টরা আমলে নেয়নি।

শেভরনের অন্য ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে জালালাবাদ থেকে দৈনিক ১৮৮ মিলিয়ন ঘনফুট এবং মৌলভীবাজার থেকে দৈনিক ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তোলা হচ্ছে।

সম্প্রতি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে খোলাবাজারের (স্পট মার্কেট) এলএনজি আমদানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দেশের মধ্যে থেকে গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়ে এই সংকট মোকাবিলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে সব চাইতে বেশি গ্যাস উৎপাদন করে আসা শেভরনের এই চিত্র সকলকে হতাশ করেছে।

জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, আমরা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। কেন উৎপাদন কমছে, কী করলে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়ন সম্ভব—এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো।