জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠন ও পৃথককরণ ইস্যুতে চলমান অস্থিরতা এবং কর্মকর্তাদের আন্দোলনের জটিলতা নিরসনে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আড়াই ঘণ্টার বৈঠক শেষে রাতেই সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজস্ব সেবা একটি অত্যাবশ্যকীয় (এন্সেসিয়াল) সার্ভিস। আমি আশাবাদী, সংশ্লিষ্ট সবাই বিষয়টি উপলব্ধি করবেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আরেকটি বৈঠক ডেকেছি, যেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আন্দোলনকারীদের ঘোষিত কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের অনুরোধ করেছি—এই মুহূর্তেই কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে। আমি আশা করি, দেশের স্বার্থে, ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে তারা সমঝোতায় আসবেন। এটি কোনও ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এটি জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন।’
অন্যদিকে, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানান, সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনবিআরের ১৭ সদস্যের মধ্যে ১৬ জন অংশ নেন। আলোচনায় আন্দোলনের পটভূমি, ভুল বোঝাবুঝির উৎস এবং তা নিরসনের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশের আমদানি-রফতানি, ব্যবসা-বাণিজ্য সরাসরি সম্পৃক্ত। সেখানে ভুল বোঝাবুঝি হলে তার প্রভাব অনেক দূর পর্যন্ত যায়। আজকের আলোচনায় এর উৎস খুঁজে পাওয়া গেছে এবং আমরা একটি সুন্দর সমাধানের পথেই এগোচ্ছি।’
চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে—ভার্চুয়াল মাধ্যমে কিংবা বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী, কারণ যারা আমাদের রাজস্ব আহরণে নিয়োজিত, তারা সবাই মেধাবী ও দায়িত্বশীল।’
তিনি যোগ করেন, ‘আন্দোলনের মধ্যেও রাজস্ব আহরণ থেমে নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্বশীলভাবে কাজ করছেন। তাদের উদ্বেগ আমরা বুঝি এবং সেটি আলোচনার মাধ্যমে উন্মোচিত হয়েছে। আশা করছি, আজ রাতের মধ্যেই সুখবর দিতে পারব।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রস্তাবিত ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব প্রশাসন পৃথকীকরণ’ উদ্যোগের বিরোধিতায় এনবিআরের কর্মকর্তারা আন্দোলনে নেমেছেন। এতে রাজস্ব ভবনে কর্মপরিবেশে চরম অচলাবস্থা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও মোতায়েন করা হয়। তবে বৃহস্পতিবারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বস্তির দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।