দেশি কয়লায় খরচ বেশি, বিদেশের কয়লায় কম

দেশীয় কয়লায় চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে আমদানি করা কয়লায় উৎপাদন খরচ কম পড়ছে। পার্থক্যটা ইউনিট প্রতি ২ টাকা ১১ পয়সা।

দেশে মাত্র দুটি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। যার একটি দেশি কয়লা ও আরেকটি আমদানির কয়লায় চলে।

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা দিয়ে খনিমুখে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিট প্রতি ব্যয় পড়ছে ৮ টাকা ৭১ পয়সা। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা কয়লায় পায়রাতে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে সেখানে খরচ পড়ছে ৬ টাকা ৬০ পয়সা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের কয়লায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কম হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে এর কিছু যৌক্তিক কারণ রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

প্রথমত, দেশি কয়লা পিডিবিকে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে কেন্দ্রটি পুরোমাত্রায় চলার মতো কয়লা বড়পুকুরিয়া খনি দিতেও পারছে না। তাই ব্যয়ও বেড়ে যায়। এছাড়া, কেন্দ্রটি সাব ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেশি কয়লার প্রয়োজন হয়।

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। বলা হচ্ছে, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে নির্মিত। এতে জ্বালানি খরচ কম হয়। আবার কেন্দ্রটির জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা কেনা হলেও তা প্রতিযোগিতামূলক দরে কিনে আনা হয়েছে।

তবে কেন্দ্রটি ১৩২০ মেগাওয়াটের। সঞ্চালন সীমাবদ্ধতার কারণে এটি পূর্ণমাত্রায় উৎপাদন করতে পারছে না। পূর্ণ মাত্রায় উৎপাদন সম্ভব হলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ আরও কমতো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোনও সাবক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন দক্ষতা (এফিসিয়েন্সি) ৩৩ থেকে সর্বোচ্চ ৩৭ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে। অন্যদিকে সুপারক্রিটিক্যালে এই দক্ষতা ৪৪ থেকে ৪৬ ভাগ হতে পারে।

উৎপাদনের এই দক্ষতার হেরফেরের কারণেই কম জ্বালানিতে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। যেটি পায়রা এবং দিনাজপুরের মধ্যে দামের বড় পার্থক্য করে দিচ্ছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানির এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা চেয়েছি দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে। সেটি সফলভাবে করতে পেরেছি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ফুল লোডে চললে আরও ব্যয় কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।

বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারা পর্যাপ্ত কয়লা পাচ্ছেন না। যে কারণে কেন্দ্রটির উৎপাদন খরচ বেশি পড়ছে। আপাতত খরচ কমার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।