কর পরিশোধ নিয়ে জটিলতা: যে পদক্ষেপ নিলো পেট্রোবাংলা

কর পরিশোধ নিয়ে জটিলতা বাড়তে থাকায় এবার জ্বালানি বিভাগের দ্বারস্থ হলো পেট্রোবাংলা। রাষ্ট্রায়ত্ত এই কোম্পানির তরফ থেকে জ্বালানি বিভাগকে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, জাতীয় রাজস্ববোর্ডের দাবি এতটাই অসামঞ্জস্যপূর্ণ যে এটি পেট্রোবাংলার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, পেট্রোবাংলা যে এলএনজি আমদানি করে তার ভর্তুকি দেওয়া হয় অর্থ বিভাগ থেকে। আবার এলএনজি আমদানির ওপর ভ্যাট এবং কর পরিশোধ করতে হয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে। এখানে সরকারের এক সংস্থা থেকে আরেক সংস্থায় টাকাগুলো লেনদেন হয়। কিন্তু কোনও কোনও সময় দেখা যায় পেট্রোবাংলা ভ্যাট এবং করের টাকা কম দিচ্ছে আবার কখনও কখনও ভর্তুকি বাবদ কম অর্থ ছাড় করা হয়। এটি মূলত সরকার এবং পেট্রোবাংলার আর্থিক সংস্থান না থাকার কারণে হয়ে থাকে। এটি দীর্ঘ সময় ধরে জমতে থাকলে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এখন হয়েছেও তাই।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, দেশে এলএনজি আমদানি হচ্ছে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ববোর্ড ভ্যাট এবং করের টাকা দাবি করছে ২০১৭ সাল থেকে। এটি আরেকটি জটিলতা। যা সমাধান হওয়া জরুরি। এছাড়াও দাম বৃদ্ধির ফলে ভ্যাট এবং আয়কর বাড়ে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলা ছাড় চেয়ে আবেদন করে। এসব আবেদনের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আবার কেউ অর্থ পরিশোধ না করলে পরে এসব নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

পেট্রোবাংলা ভবন

পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এনবিআর এর সঙ্গে আমাদের নানা ইস্যু রয়েছে। আমরা পরস্পর এ বিষয়গুলো নিয়ে চিঠি চলাচালি করেছি। কিন্তু কোনও সমাধানে পৌঁছানে সম্ভব হয়নি। এখন মনে করা হচ্ছে এটি নিয়ে বড় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য আমরা জ্বালানি বিভাগের হস্তক্ষেপ চেয়েছি। যাতে জ্বালানি বিভাগের হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হয়।’

পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ এক বৈঠকে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন, পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন কোম্পানিসমূহের নিকট এনবিআর এর পাওনার বিষয়টি বর্তমানে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে গেছে। এনবিআর এর কাছে ১৫০০ কোটি টাকা জমা দিলেও তা সমন্বয় করা হচ্ছে না অথবা ফেরতও দেওয়া হচ্ছে না। তাই এ বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। আগামী দিনে এনবিআর এর সঙ্গে যে বিষয়গুলো অমিমাংসিত/চলমান রয়েছে সেগুলোর সমন্বয়ে একটি কার্যপত্র প্রস্তুতপূর্বক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে প্রেরণ করা হবে।

সূত্র বলছে, আন্ত সংস্থা দেনা পাওনা সঠিকভাবে পরিশোধ না করাতে অনেক ক্ষেত্রে বিপত্তি তৈরি হয়। মূলত পুরো প্রক্রিয়াটি একটি আর্থিক চেইনের মতো কাজ করে। কোথাও সমস্যা হলে সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট হয়।