রেকর্ডের পর রেকর্ড শেয়ারবাজারে

করোনা মহামারিতে অর্থনীতির বেশিরভাগ সূচক দুরাবস্থায় পড়লেও রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ছে শেয়ারবাজার। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৬ হাজার ৬০০ পয়েন্টের কাছাকাছি চলে এসেছে।

বৃহস্পতিবার সূচকটি ৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৯৬ পয়েন্টে উঠেছে। যা এ সূচকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর পাশাপাশি ডিএসইএস সূচক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৩৯ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৫৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এই দুটি সূচকও রেকর্ড গড়েছে।

এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসে (ব্যাংক বন্ধ থাকায় রবি ও বুধবার লেনদেন হয়নি) ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ১৭১ পয়েন্ট।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধে সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি ১ আগস্ট ও ৪ আগস্ট ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ ছিল। ফলে ২-৫ আগস্ট মোট তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে। তিনদিনেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের।

এ ছাড়া বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরেছে ৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকারও বেশি। শুধু তাই নয়, বাজার মূলধনও অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এখন প্রায় ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৬ কোটি টাকায় অবস্থান করছে। জুলাইতেই বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরেছে ২০ হাজার কোটি টাকা।

অপরদিকে, প্রায় দুই মাস ধরে দুই হাজার কোটি টাকার নিচে লেনদেন হওয়া ডিএসইর লেনদেন এখন আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে। বাজারে সার্বিক বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। তবে ভালো কোম্পানির চেয়ে দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াটা ভালো নয়। সম্প্রতি এ ধরনের কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে, যা পুঁজিবাজারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। বিএসইসিকে বিষয়টি দেখতে হবে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে তিনদিনে প্রায় সাত হাজার ১৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে মোট পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল সাত হাজার ১২৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকারও বেশি। আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন কিছুটা কমলেও গড় লেনদেন বেড়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহের গড় লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। গড় লেনদেন বেড়েছে ৯শ কোটি টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৮৩টির, কমেছে ৮৩টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির।

বেশিরভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় সূচকের বাজার মূলধন ৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বেড়ে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৩৪ হাজার ৪০৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

এদিকে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) তিন কার্যদিবসে প্রায় ২৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৬৯টির, কমেছে ৫৯টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের।

বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় সিএসইর প্রধান সূচক সিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ৫৫৩ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।