সারিয়াকান্দি ও সোনাতলায় যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি, বন্যার্তদের দুর্ভোগ

সারিয়াকান্দির শেখ পাড়ার একটি পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেউজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলায় যমুনা নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। শনিবার সকালে পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দু’টি উপজেলার অনেক গ্রামের মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। তারা সহায়-সম্বল নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য শনিবার সারিয়াকান্দির বন্যা দুর্গতদের মাঝে ৫০ টন চাল বিতরণ করেছেন।
সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের কাজলা, চালুয়াবাড়ি, কর্ণিবাড়ি, বোহাইল, চন্দনবাইশা, সারিয়াকান্দি সদর, শেরপুর, কুতুবপুর ও কামালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার বন্যা দুর্গত ইতিমধ্যেই বড়ইকান্দি থেকে কামালপুর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত  আড়াই হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান শনিবার রৌহাদহ ও আবদুল মান্নান মহিলা কলেজ পয়েন্টে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আড়াই হাজার পরিবারের মাঝে ৫০  টন চাল বিতরণ করেছেন।
অন্যদিকে সোনাতলা উপজেলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বসতবাড়ি, জায়গা-জমি ও গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে পাকুল্লা ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর দক্ষিণপাড়ায় অন্তত ২৫টি বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাসকারী পুরো গ্রামসহ মসজিদ ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাকুল্লা ইউনিয়নের সাতবেকী, মির্জাপুর, পাকুল্লা রাধাকান্তপুর, চারালকান্দি গ্রামের কয়েকশ’ মানুষ ইতিমধ্যেই তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। নামাজখালী ও রংরারপাড়া গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে।

তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের চর খাবুলিয়া, মহনপুর, জন্তিয়ারপাড়া, সরলিয়া, মহব্বতের পাড়া, মুশোরপাড়া, ভিকনেরপাড়া, আউচারপাড়া, পূর্বতেকানী এলাকায় নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় ওই গ্রামগুলোতে বসবাসকারী লোকজনেরা দ্রুত নিরাপদ স্থানে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জোড়গাছা ইউনিয়নের হলিদাবগা পূর্বপাড়া, পোড়াপাইকর গাছবাড়ি এলাকায় বাঙালি নদীর অব্যাহত ভাঙনে ইতিমধ্যেই ২৪/২৫টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও পোড়াপাইকর খোসকাতলী এলাকায় নদীভাঙনে ১০/১৫টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ৪০/৫০টি বাড়ি ইতিমধ্যেই অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে সোনাকানিয়া শত বছরের প্রাচীন জামে মসজিদ, গুড়াভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গুড়াভাঙ্গা বাজার।

 শনিবার সরে ওইসব এলাকায় দেখা গেছে, যমুনা ও বাঙালি নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, গাছপালা ও ফসলি জমি। দুর্গতরা নৌকাযোগে তাদের বসতবাড়ি ও গবাদি পশু নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। পাকুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান শান্ত, তেকানী চুকাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মাষ্টার, জোড়গাছা ইউপি চেয়ারম্যান রোস্তম আলী মণ্ডল জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সবকিছু করা হবে।

/এমএসএম/